পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) অনুমোদিত ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই “সাহিত্যমেলা” । এখানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘মন ভালো করা’ কবিতাটি দেওয়া হল ।
মন ভালো করা – কবিতা
মন-ভালো-করা রোদ্দুর কেন
মাছরাঙাটির গায়ের মতন ?
হ্রস্ব দীর্ঘ নীল-নীলান্ত
কেন ওর রং খর ও শান্ত,
লাল হরিদ্রা সবুজাভ বন ?
মন-ভালো-করা রোদ্দুর কেন
মাছরাঙাটির গায়ের মতন ?
মাছরাঙাটির গায়ে আলো পড়ে
হাওয়ায়-বাতাসে পাতারাও নড়ে,
মাছরাঙাটির গায়ে হাওয়া পড়ে ।
মন-ভালো-করা রোদ্দুর কেন
মাছরাঙাটির গায়ের মতন ?
Read Also:
ভরদুপুরে – কবিতা | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা
সেনাপতি শংকর – গল্প | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা
পাইন দাঁড়িয়ে আকাশে নয়ন তুলি – কবিতা | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা
পশুপাখির ভাষা – গল্প | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা
ঘাসফড়িং – কবিতা | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা
কুমোরে পোকার বাসাবাড়ি – গল্প | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা
মন ভালো করা কবিতার কবি পরিচিতি:
শক্তি চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৩–১৯৯৫): বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি । জন্ম দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহড়ু গ্রামে । পড়াশুনো করেছেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে । তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ্য । এছাড়াও ধর্মে আছি জিরাফেও আছি, হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান, সোনার মাছি খুন করেছি, যেতে পারি কিন্তু কেন যাব উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ । কুয়োতলা, অবনী বাড়ি আছো ? বিখ্যাত উপন্যাস । তিনি আনন্দ পুরস্কার এবং সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন ।
মন ভালো করা কবিতার সারসংক্ষেপ:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘মন ভালো করা’ কবিতায়, কবির মনে প্রশ্ন জেগেছে, তাঁর মন ভালো করে দেওয়া উজ্জ্বল রোদের সঙ্গে মাছরাঙা পাখির গায়ের রঙের এত মিল হওয়া কীভাবে সম্ভব ? কবি আকাশের হালকা বা গাঢ় নীল রঙের সঙ্গে মাছরাঙার গায়ের আঁকিবুকি রঙিন পালকের তুলনা করেছেন । দিনের বিভিন্ন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রোদ্দুর যেমন লাল, হলুদ ইত্যাদি নানারকম রঙ ধারণ করে, মাছরাঙার গায়েও তেমনি লাল, হলুদ, সবুজ এমন নানান রঙ দেখা যায় । কবির মনে হয়েছে, যেভাবে মাছরাঙার রঙিন গায়ে আলো পড়ে পিছলে যায়, ঠিক তেমনই অল্প হাওয়ায় পাতারাও নড়ে । সেই হাওয়ার ছোঁয়া লাগে মাছরাঙার শরীরেও । কবির বারবার মনে হয়, মন ভালো করা রোদ্দুর, আকাশ ইত্যাদি সবই মাছরাঙার গায়ের মতো বর্ণময়, সুন্দর ।
মন ভালো করা কবিতার নামকরণের সার্থকতা:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘মন ভালো করা’ কবিতায়, কবি রোদের সঙ্গে মাছরাঙা পাখির গায়ের রঙের আশ্চর্য মিল লক্ষ করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন । তাঁর মনে এই প্রশ্নই বারবার উঠে এসেছে যে, কেন মন ভালো করা রোদ্দুরের রঙ মাছরাঙার গায়ের রঙের মতো । মাছরাঙার ছোটোবড়ো রঙিন উজ্জ্বল পালকের গায়ে যখন আলো পড়ে, তখন কবির মনে খুশি হয়, তেমনই রোদের দিকে তাকিয়েও তাঁর মন আনন্দে ভরে ওঠে । তাই কবিতাটির বিষয়বস্তু অনুযায়ী ‘মন ভালো করা’ কবিতার নামকরণ সার্থক হয়েছে ।
Follow us:
If you like this article, you can Follow us on Facebook.
Also, you can Subscribe to our YouTube Channel.