সেনাপতি শংকর – প্রশ্ন ও উত্তর | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) অনুমোদিত ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই “সাহিত্যমেলা” । এখানে লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পটির প্রশ্ন ও উত্তর (হাতে কলমে) আলোচনা করা হল ।

সেনাপতি শংকর – প্রশ্ন ও উত্তর

উত্তর : শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দুটি বইয়ের নাম – ‘সেনাপতি শংকর’ এবং ‘কুবেরের বিষয়আশয়’।

উত্তর : তিনি ‘শাহাজাদা দারাশুকো’ উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে আকন্দবাড়ির স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ভেটুরিয়া, সাঁইবাড়ি, ঘোলপুকুর আর আকন্দবাড়ি থেকে পড়তে আসে ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে স্কুলের জানলা দিয়ে আকাশের মেঘ দেখা যায়, দেখা যায় পাখি উড়ছে ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকর স্বপ্ন দেখে শঙ্খচিলের মতো সে ঘোলপুকুরে গাব গাছের উঁচু ডাল থেকে ঝাঁপ দিচ্ছে বড়ো দিঘিতে । সোজা জলে না পড়ে সে শঙ্খচিলের মতো ভাসছে । ডানার বদলে দুহাতে বাতাস কেটে, পিছনে দু-পা ঠেলে এগিয়ে যাচ্ছে উঁচুতে ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকরের স্বপ্নে বাতাসের রং নীলচে ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে এমু ছাড়া উড়তে পারে না শুধু দৌড়তে পারে এমন একটি পাখির নাম উটপাখি ।

বিদ্যালয়, অনিল, জগৎ, একাগ্র-চিত্ত, পাখা, রোপণ করা ।

উত্তর : গল্প থেকে একই অর্থযুক্ত শব্দ :

বিদ্যালয় – স্কুল
অনিল – বাতাস
জগৎ – পৃথিবী
একাগ্র-চিত্ত – আনমনা
পাখা – ডানা
রোপণ করা – রোয়া

ভিজে, রাত, বাইরে, গাঢ়, বিশ্বাস ।

উত্তর : বিপরীতার্থক শব্দ :

ভিজে – শুকনো
রাত – দিন
বাইরে – ভিতরে
গাঢ় – হাল্কা
বিশ্বাস – অবিশ্বাস

৪. নম্বর প্রশ্নের উত্তরের বাক্য রচনা তোমরা নিজেরা লেখো । তোমাদের লেখা উত্তর এই পোষ্টের Comment Section-এ অথবা YouTube Channel এর ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর ভিডিও-এর Comment Section-এ আমাদের পাঠাতে পারো ।

বঙ্গোপসাগর, তন্ময়, সাবধান, ত্রিশেক, পঞ্চানন ।

উত্তর : সন্ধি বিচ্ছেদ :

বঙ্গোপসাগর = বঙ্গ + উপসাগর
তন্ময় = ত‍দ্ + ময়
সাবধান = স + অবধান
ত্রিশেক = ত্রিশ + এক
পঞ্চানন = পঞ্চ + আনন

প্রকৃতি, ব্যথা, মাটি, বিশ্বাস, জল, মাঠ, শব্দ ।

উত্তর :

বিশেষ্যবিশেষণ
প্রকৃতিপ্রাকৃতিক
ব্যথাব্যথিত
মাটিমেটে
বিশ্বাসবিশ্বাসী, বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য
জলজলীয়
মাঠমেঠো
শব্দশাব্দিক, শব্দময়

উত্তর : সমোচ্চারিত বা প্রায় সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ :

ভাষা – মত প্রকাশের মাধ্যম বা কথা বলার ক্ষমতা
ভাসা – ভেসে থাকা বা জলের উপর অবস্থান করা

পড়ে – নীচে নেমে যাওয়া বা স্থানচ্যুত হওয়া
পরে – পরিধান করে অথবা ভবিষ্যতে

শংকর – শিব
সংকর – মিশ্র

মাথা – মস্তক
মাতা – মা, জননী

বাঁশ – একটি দীর্ঘ ও খোলযুক্ত গাছ, যা কাঠামো বা অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়
বাস – থাকার স্থান বা বাসস্থান অথবা যানবাহন

৭. নম্বর প্রশ্নের উত্তরের বাক্য রচনা তোমরা নিজেরা লেখো । তোমাদের লেখা উত্তর এই পোষ্টের Comment Section-এ অথবা YouTube Channel এর ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর ভিডিও-এর Comment Section-এ আমাদের পাঠাতে পারো ।

উত্তর :

গল্পে উল্লেখিত পাখির নামের তালিকা ও তথ্য :

পাখির নামআকাররংঠোঁটলেজপাঝুঁটি
দুর্গা টুনটুনিছোটোবেগুনিসরু, লম্বা, বাঁকানোছোটোসরু, লম্বানেই
শঙ্খচিলমাঝারি থেকে বড়কালো, সাদাবাঁকা, শক্তমাঝারি লম্বা, চওড়াছোট, শক্তনেই
এমুবিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখিবাদামি ও ধূসর মিশ্রিতছোট, শক্তছোট ও ঘন পালকযুক্তলম্বা, শক্তিশালীছোট কালো পালকের মতো
বাজবড় শিকারি পাখিবাদামি, সাদা এবং কালো ছোপবাঁকা, তীক্ষ্ণছোট, চওড়াশক্ত, ধারালো নখযুক্তনেই
কাকমাঝারিপুরোপুরি কালো বা কালো ও ধূসর মিশ্রণশক্ত, মাঝারি লম্বাছোটছোট, শক্তিশালীনেই
মাছরাঙাছোট থেকে মাঝারিনীল, সবুজ, সাদা এবং কমলালম্বা, ধারালোছোটছোট ও লালচেকিছু প্রজাতিতে থাকে
হাঁড়িচাচামাঝারিকালো, সাদাছোট, বাঁকাছোট, চওড়ামাঝারি লম্বানেই
ডৌখোলছোটসবুজ ও হলুদ মিশ্রণছোট, বাঁকাছোটছোটনেই
পানকৌড়িমাঝারিকালো এবং সবুজাভলম্বা, বাঁকামাঝারি লম্বাজালিকাযুক্ত (জলে সাঁতার উপযোগী)নেই
তিতিরছোট থেকে মাঝারিকালো, বাদামি এবং সাদাছোট, শক্তছোটছোট, লালচে ও শক্তনেই

গল্পে উল্লেখিত গাছের নামের তালিকা ও তথ্য :

গাছের নামআকারকী জাতীয়পাতাগুলো কেমনফুলফলকোথায় দেখেছ
নারকেললম্বাপাম জাতীয় গাছসরু, লম্বাছোট, হলুদ বা সাদা, থোকায় থাকেসবুজ বা বাদামি শক্ত খোলযুক্ত, ভেতরে জল ও শাঁস থাকেসমুদ্র উপকূল, গ্রামাঞ্চলে
গাবমাঝারি থেকে বড়ফলজ গাছগাঢ় সবুজ, মোটা ও চকচকেছোট, সাদা রঙেরছোট, গোলাকার, পাকা হলে কালো হয়গ্রামাঞ্চলে, বনাঞ্চলে
সবেদাছোট থেকে মাঝারিফলজ গাছসরল, চকচকে সবুজছোট, সাদা বা হলদেগোলাকার বা ডিম্বাকৃতির, খোসা বাদামি, ভেতরে মিষ্টি শাঁস থাকেবাগানে বা গ্রামাঞ্চলে
জামবড়ফলজ গাছবড়, ডিম্বাকৃতি, সবুজছোট, সাদা বা হলুদছোট, গোলাকার, কালো বা বেগুনিগ্রামাঞ্চলে, মাঠে বা বাড়ির আঙিনায়

৮. নম্বর প্রশ্নের উত্তরে গল্পে উল্লেখিত পাখির ও গাছের নামের তালিকা ও তথ্য উপরে দেওয়া হয়েছে । এগুলি ছাড়াও তোমার জানা আরও কিছু পাখি আর গাছের নাম, তাদের বৈশিষ্ট্য তোমরা নিজেরা লেখো । তোমাদের লেখা উত্তর এই পোষ্টের Comment Section-এ অথবা YouTube Channel এর ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর ভিডিও-এর Comment Section-এ আমাদের পাঠাতে পারো ।

উপসর্গশব্দনতুন শব্দ
বিজ্ঞান, শ্বাস, ভীষণ, দেশবিজ্ঞান, বিশ্বাস, বিভীষণ, বিদেশ
প্রগাঢ়, দেশ, শ্বাসপ্রগাঢ়, প্রদেশ, প্রশ্বাস
নিবাসনিবাস
সুস্বপ্ন, দিন, নীল, বাসসুস্বপ্ন, সুদিন, সুনীল, সুবাস
বাস, দেশআবাস, আদেশ

১০.১ পাঁচ সাত মাইলের ভেতর বঙ্গোপসাগর।

উত্তর : পাঁচ সাত ।

১০.২ জনা ত্রিশেক ছেলেমেয়ে বসে ।

উত্তর : জনা ত্রিশেক ।

১০.৩ সেদিকে তাকিয়ে একটি ছেলে আনমনা হয়ে পড়েছিল ।

উত্তর : একটি ।

১০.৪ এক একদিন রাতে স্বপ্নের ভেতর সেও অমন ভেসে পড়ে ।

উত্তর : এক একদিন ।

১১.১ এখানে বাতাসের ভেতর সবসময় ভিজে জলের ঝাপটা থাকে ।

উত্তর :

ভেতর – অনুসর্গ
থাকে – অনুসর্গ

এখানে – এ বিভক্তি
বাতাসের – এর বিভক্তি
সবসময় – শূন্য বিভক্তি
ভিজে – শূন্য বিভক্তি
জলের – এর বিভক্তি
ঝাপটা – শূন্য বিভক্তি

১১.২ মাটির মেঝে ।

উত্তর :

কোনো অনুসর্গ নেই

মাটির – র বিভক্তি
মেঝে – শূন্য বিভক্তি

১১.৩ সেই জানলা দিয়ে মেঘ দেখা যায় আকাশের ।

উত্তর :

দিয়ে – অনুসর্গ

সেই – শূন্য বিভক্তি
জানলা – শূন্য বিভক্তি
মেঘ – শূন্য বিভক্তি
দেখা – শূন্য বিভক্তি
যায় – শূন্য বিভক্তি
আকাশের – এর বিভক্তি

১১.৪ স্বপ্নের ভেতর সে খাট থেকে পড়েও যায় ।

উত্তর :

ভেতর – অনুসর্গ
থেকে – অনুসর্গ
পড়েও – অনুসর্গ

স্বপ্নের – এর বিভক্তি
সে – শূন্য বিভক্তি
খাট – শূন্য বিভক্তি
যায় – শূন্য বিভক্তি

১১.৫ সে তার স্বপ্নের কথা আর কাউকে কখনও বলবে না ।

উত্তর :

কখনও – অনুসর্গ

সে – শূন্য বিভক্তি
তার – শূন্য বিভক্তি
স্বপ্নের – এর বিভক্তি
কথা – শূন্য বিভক্তি
আর – শূন্য বিভক্তি
কাউকে – কে বিভক্তি
বলবে – শূন্য বিভক্তি
না – শূন্য বিভক্তি

১২.১ আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভে বিভীষণ দাশ এমু পাখির কথা বলেছিলেন ।

১২.২ স্কুলের সামনে ধানক্ষেতে রোয়া ধান সবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ।

১২.৩ গাঢ় ছাইরঙের বিরাট এক পাখি ।

১২.৪ তন্ময় হয়ে শুনছিল শংকর ।

১২.৫ এই খোলামেলা পৃথিবীই সবচেয়ে বড়ো বই ।

উত্তর :

উদ্দেশ্যবিধেয়
১২.১ বিভীষণ দাশআকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভে এমু পাখির কথা বলেছিলেন
১২.২ স্কুলের সামনে ধানক্ষেতে রোয়া ধানসবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে
১২.৩ বিরাট এক পাখিগাঢ় ছাইরঙের
১২.৪ শংকরতন্ময় হয়ে শুনছিল
১২.৫ এই খোলামেলা পৃথিবীইসবচেয়ে বড়ো বই

উত্তর :

কথা
অর্থ ১: শব্দের মাধ্যমে মত প্রকাশ বা ভাষা
অর্থ ২: প্রতিশ্রুতি বা কথা দেওয়া

চোখ
অর্থ ১: দৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা অঙ্গ
অর্থ ২: নজর বা মনোযোগ

১৪.১ জানলায় কোনো শিক নেই ।

উত্তর : সরল বাক্য ।

১৪.২ জেগে থাকতে দেখা আর স্বপ্নে দেখা জিনিস আজকাল শংকরের গুলিয়ে যাচ্ছে ।

উত্তর : যৌগিক বাক্য ।

১৪.৩ পাখি দেখার জন্য যখন মাঠে বা বাগানে ঘুরবে-তখন খুব সাবধানে পা টিপে টিপে চলবে ।

উত্তর : জটিল বাক্য ।

১৪.৪ বিভীষণ মাস্সাই যে তাকে এমন একটা কথা বলবেন তা ভাবতে পারেনি শংকর ।

উত্তর : জটিল বাক্য।

গুঁড়ো, প্রকৃতি, জানলা, ডানা, ছায়া, শব্দ, স্বপ্ন, খোলামেলা ।

উত্তর : জানলার পাশ থেকে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যায় । সবুজ গাছের ছায়া, খোলামেলা আকাশ, আর পাখিদের ডানা মেলে উড়ে যাওয়া মনকে প্রশান্ত করে । বাতাসে ভেসে আসে পাখির মিষ্টি শব্দ, তা যেন প্রকৃতির এক অদ্ভুত সঙ্গীত । কখনও গাছের পাতায় জমে থাকা শিশিরের গুঁড়ো রোদে ঝলমল করে উঠে, যা স্বপ্নের জগতে নিয়ে যায় । প্রকৃতির এই মুক্ত পরিবেশে সময় কাটানো মানে নিজের সঙ্গে এক গভীর বন্ধন তৈরি করা ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বাতাসকে ‘পাগলা’ বলা হয়েছে কারণ এটি সমুদ্রের ঢেউয়ের গুঁড়ো নিয়ে আশপাশের এলাকায় সবসময় উড়ে বেড়ায় । এই বাতাস অস্থির, দিকহীন, এবং একধরনের চঞ্চল আচরণ করে, যা ‘পাগল’ বা অস্থির প্রকৃতির মতো মনে হয় । বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি হওয়ার কারণে এই বাতাসের ধরণ এমনই ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বিভীষণ দাশ আকন্দবাড়ি স্কুলের একজন প্রকৃতিবিজ্ঞানের শিক্ষক । তিনি ক্লাস ফাইভের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃতি এবং প্রাণীদের বিষয়ে পড়ান । গল্পে তিনি এমু পাখির বৈশিষ্ট্য ও তার বাসস্থান নিয়ে আলোচনা করছিলেন ।

এমু পাখি ছাড়া গল্পে শঙ্খচিল, বাজ, কাক, মাছরাঙা, হাঁড়িচাচা, ডৌখোল, পানকৌড়ি, তিতির পাখির প্রসঙ্গ এসেছে ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকর গল্পের প্রধান চরিত্র । সে অভিমন্যু সেনাপতির ছেলে শংকর সেনাপতি । সে আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভের একজন ছাত্র ।

শংকর খুব কল্পনাপ্রবণ,আনমনা এবং প্রকৃতি ও পাখি দেখতে ভালোবাসে । সে স্বপ্নে অনেক রকম পাখি দেখে । তার স্বভাব অনেকটা স্বপ্নময় এবং চিন্তাধারা বাস্তব ও কল্পনার মাঝামাঝি ।

শংকর বুঝল, ‘কোথাও একটা বড়ো ভুল হয়ে যাচ্ছে,’ কারণ বিভীষণ মাস্টারমশাই যখন তাকে এমু পাখি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন সে স্বপ্নে দেখা এক বিরাট পাখির বর্ণনা দিতে থাকে । কিন্তু মাস্টারমশাই তাকে জানান যে এমু পাখি উড়তে পারে না, বরং এটি দৌড়াতে পারদর্শী । শংকর তখন উপলব্ধি করে যে, সে বাস্তব পাখি নয়, বরং তার স্বপ্নের মধ্যে দেখা কল্পনার পাখির কথা বলেছে । এই কারণে সে নিজেকে বিভ্রান্ত মনে করে এবং বুঝতে পারে যে সে ভুল করেছে ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকর এমু পাখির যে বর্ণনা দিয়েছিল, তার সঙ্গে পাখিটির মিল এবং অমিল হলো:

মিল:

  • শংকর বলেছিল এমু বড়ো আকারের পাখি । এটি ঠিক, কারণ এমু আসলে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি ।
  • পাখিটি দেখতে গাঢ় রঙের । শংকরও বলেছিল এটি গাঢ় ছাই রঙের ।

অমিল:

  • শংকর বলেছিল এমু উড়ে যায় এবং ডানায় বাতাস কাটার শব্দ হয় । কিন্তু মাস্টারমশাই বলেছিলেন, এমু উড়তে পারে না, এটি কেবল দৌড়াতে পারে । এমু দৌড়বাজ পাখি ।
  • শংকর বলেছিল এমু সবেদা গাছে বসে ছিল, কিন্তু বাস্তবে এমু গাছে ওঠে না এবং আন্ডিজ পর্বতে থাকে ।

শংকর স্বপ্নের পাখির সঙ্গে বাস্তবের এমু পাখিকে গুলিয়ে ফেলেছিল ।

উত্তর : অপেরা হলো মঞ্চে অভিনয়সহ গাওয়া একটি নাটক, যেখানে গল্পের মধ্যে গান, আবেগ, এবং অনেক নাটকীয় ঘটনা থাকে ।

লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে অপেরার প্রসঙ্গ এল, কারণ শংকর এমু পাখি নিয়ে যা বলছিল, তা মাস্টারমশাইয়ের কাছে অনেকটা কল্পনাপ্রসূত এবং অতিরঞ্জিত মনে হয়েছিল । শংকর বলেছিল এমু উড়ে যায়, ডানায় বাতাস কাটার শব্দ হয়, আর অন্য পাখিরা ভয়ে সরে যায় । এসব কথা মাস্টারমশাইয়ের কাছে নাটকের মতো শোনায় । তাই তিনি ঠাট্টা করে “পঞ্চানন অপেরা”র কথা বলেছিলেন ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে ‘বলো, বলতেই হবে’ কথাটি শংকরকে বলা হয়েছিল ।

মাস্টারমশাই বিভীষণ দাশ জানতে চেয়েছিলেন, শংকর কোথায় এমু পাখি দেখেছে । শংকর বলেছিল, সে ঘোলপুকুরে বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছে এমু পাখি দেখেছে । কিন্তু মাস্টারমশাই বিশ্বাস করতে পারেননি, কারণ এমু পাখি আন্ডিজ পর্বতে থাকে এবং উড়তে পারে না । তাই মাস্টারমশাই জোর দিয়ে শংকরকে সত্যি কথাটা বলতে বলেছিলেন । পরে শংকর স্বীকার করে, সে স্বপ্নে এমু পাখি দেখেছিল ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে আকন্দবাড়ি স্কুলে প্রকৃতিবিজ্ঞান ক্লাসে বিভীষণ মাস্টারমশাই এমু পাখি নিয়ে পড়াচ্ছিলেন । ক্লাসের সব ছেলেমেয়ে মন দিয়ে শুনছিল, কিন্তু শংকর জানালার বাইরে আনমনা হয়ে আকাশের তাকিয়ে ছিল । সে শঙ্খচিল উড়তে দেখে ভাবনার জগতে হারিয়ে গিয়েছিল । হঠাৎ মাস্টারমশাই তাকে ডাকলে সে চমকে ওঠে ।

শংকর বলেছিল, সে এমু পাখি দেখেছে । মাস্টারমশাই জিজ্ঞেস করেন, কোথায় দেখেছে । শংকর বলে, ঘোলপুকুরের বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছে এমু পাখি বসেছিল । মাস্টারমশাই অবাক হয়ে জানতে চান, কেমন দেখতে । শংকর বলে, বড়, ছাই রঙের, আর উড়তে গিয়ে ডানায় বাতাস কাটার শব্দ হয় ।

তখন মাস্টারমশাই তাকে সংশোধন করে বলেন, এমু পাখি উড়তে পারে না, এটি আন্ডিজ পর্বতে থাকে এবং খুব দ্রুত দৌড়ায় । শংকর বুঝতে পারে, সে ভুল করেছে । শেষে স্বীকার করে, এমু পাখি সে স্বপ্নে দেখেছিল । ক্লাসে সবাই হাসতে থাকে, আর শংকর অস্বস্তি বোধ করে । তবুও মাস্টারমশাই তাকে প্রকৃতির দিকে মনোযোগ দিতে বলেন । তিনি এই পৃথিবীর পাখি, গাছপালা, মেঘ, আলো চোখ খোলা রেখে দেখার জন্য উৎসাহ দেন, যা শংকরের মনে আনন্দ এনে দেয় ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকরের স্বপ্ন দেখার কথা বলা হয়েছে ।

শংকর স্বপ্নে নিজেকে পাখির মতো উড়তে দেখে । সে দেখেছে, স্বপ্নের বাতাসের রং নীলচে, আর বাড়ি-ঘরের রং খয়েরি । স্বপ্নে কোনো ধাক্কা বা গুঁতো খেলে ব্যথা লাগে না । তাই ঘোলপুকুরে বড়োদিঘিতে ডুব দেওয়াব সময় দিঘিতে পোঁতা বাঁশে গা ঘসে গেলেও তার গায়ে ব্যথা লাগে না । শংকর ঘোলপুকুরে বড়োদিঘির জলে নিজেকে পাখির মতো ভাসতে দেখে । স্বপ্নে সে অনেক রকমের পাখি, যেমন এমু পাখি, কল্পনা করে । এইসব স্বপ্ন তার মনে আনন্দ আর উড়ে বেড়ানোর অনুভূতি এনে দেয় ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বিভীষণ মাস্টারমশাই বলেছিলেন, পাখি দেখার জন্য যখন মাঠে বা বাগানে ঘুরবে, তখন খুব সাবধানে পা টিপে টিপে চলতে হবে, যাতে পায়ের শব্দ না হয় । জামাকাপড়ের রং শুকনো পাতার রং বা জলপাই রঙের হলে ভালো, কারণ এই রং গাছের পাতার সঙ্গে মিশে যায় । বেগুনি রঙের জামা পরলেও ভালো, কারণ পাখিরা বেগুনি রং দেখতে পায় না । এভাবেই পাখিদের কাছে যাওয়া যায় ।

উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বিভীষণ মাস্টারমশাই শংকরকে বলেছিলেন, “তুমি তো গাছে গাছে ঘোরো । তুমি তো অনেকরকম পাখি দ্যাখো । তাদের কথা বলতে পারো ?”

শংকর তখন কিছুটা লজ্জা পেয়ে উত্তর দিয়েছিল, “মাছরাঙা ।
মাস্টারমশাই আবার জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আর ?
তখন শংকর আরও বলেছিল, “হাঁড়িচাচা, ডৌখোল, পানকৌড়ি, তিতির ।

এ কথা শুনে বিভীষণ মাস্টারমশাই বললেন, “বাহ ! যত পারবে চোখ খোলা রেখে এই পৃথিবীর পাখি, গাছপালা, মেঘ, আলো – সব দেখে নেবে । এই খোলামেলা পৃথিবীই সবচেয়ে বড়ো বই । তাকে চোখ ভরে দেখাই সবচেয়ে বড়ো পড়াশুনো ।

এই কথায় শংকরের মন ভরে গিয়েছিল, কারণ মাস্টারমশাই তার পাখি দেখা আর জানার ইচ্ছেটাকে প্রশংসা করেছিলেন ।

Follow us:

If you like this article, you can Follow us on Facebook.
Also, you can Subscribe to our YouTube Channel.

Leave a Reply