পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) অনুমোদিত ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই “সাহিত্যমেলা” । এখানে কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতাটির প্রশ্ন ও উত্তর (হাতে কলমে) আলোচনা করা হল ।
পিঁপড়ে – প্রশ্ন ও উত্তর
১.১ অমিয় চক্রবর্তী কোথায় অধ্যাপনা করতেন ?
উত্তর : অমিয় চক্রবর্তী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যু পলজ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন ।
১.২ তাঁর দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো ।
উত্তর : তাঁর দুটি কবিতার বইয়ের নাম হল পালাবদল, পারাপার ।
Read Also:
পিঁপড়ে – কবিতা | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা
২. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
২.১ কবির কী দেখে ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ মনে হয়েছে ?
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় কবি পিঁপড়ের ব্যস্ত চলাফেরা দেখে ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ মনে করেছেন । পিঁপড়ের এই মধুর আর একাগ্র চলাফেরা মানুষের জীবনের পরিশ্রম ও ব্যস্ততার কথা মনে করিয়ে দেয় । তাই কবির কাছে এটি পরিচিত ও চেনা বলে মনে হয়েছে ।
২.২ ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ – কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও ।
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ কথাটির অর্থ হলো কোনো কিছু দেখে বা অনুভব করে মনে হয় যে এটি আগে থেকে জানা বা পরিচিত । কবি পিঁপড়ের চলাফেরা দেখে এমনটাই মনে করেছেন, কারণ পিঁপড়ের পরিশ্রম আর ব্যস্ততা আমাদের নিজের জীবনের সঙ্গে মিলে যায় ।
২.৩ কবি কাউকে দুঃখ দিতে চাননি কেন ?
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় কবি কাউকে দুঃখ দিতে চাননি কারণ তিনি জীবনের সব প্রাণীকে ভালোবাসেন । পিঁপড়ের মতো ছোট প্রাণীরও জীবন আছে, তাদেরও কষ্ট হয় । তাই কবি মনে করেন, কারো কষ্ট দেওয়া উচিত নয় । দয়া ও ভালোবাসা দিয়ে সবার সঙ্গে থাকা উচিত ।
২.৪ ‘কোন অতলে ডাকুক’ – কে কাকে এই ডাক দেয় ?
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় ‘কোন অতলে ডাকুক’ – এই বাক্যে ছোট্ট পিঁপড়ে কবিকে এই ডাক দেয় । কবি মনে করেন, পিঁপড়ে যেন তার নিজের মতো করে প্রকৃতির গভীরতায় (অতলে) মিশে যায় । প্রকৃতি যেন পিঁপড়েকে নিজের মাঝে ডেকে নেয়, কারণ পিঁপড়ের জীবন প্রকৃতির সঙ্গে জড়িত ।
২.৫ কবি আজ প্রাণের কোন পরিচয় পেয়েছেন ?
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় কবি আজ পিঁপড়ের জীবনের গুরুত্ব ও সৌন্দর্যের পরিচয় পেয়েছেন । তিনি বুঝেছেন, পিঁপড়ে ছোট হলেও তার পরিশ্রম, একাগ্রতা আর প্রকৃতির সঙ্গে তার মিল জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা । পিঁপড়ের জীবন দেখেই কবি প্রাণের এই বিশেষ পরিচয় অনুভব করেছেন ।
২.৬ ‘দু দিনের ঘর’ বলতে কী বোঝ ?
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় ‘দু দিনের ঘর’ বলতে মানুষের এই পৃথিবীতে অল্প সময়ের জীবনকে বোঝানো হয়েছে । কবি বলতে চেয়েছেন, আমরা সবাই পৃথিবীতে কিছু সময়ের জন্য এসেছি, তাই আমাদের উচিত সবার সঙ্গে ভালোভাবে থাকা এবং ভালোবাসা ভাগ করে নেওয়া ।
৩. প্রার্থনা, নির্দেশ, অনুরোধ বোঝাতে বাংলায় ক্রিয়ার শেষে ‘উক’ যোগ হয় । (যেমন এই কবিতায় থাক্ + উক = থাকুক) কবিতা থেকে এমন আরো পাঁচটি শব্দ খুঁজে বের করো ।
উত্তর :
ঘুর্ + উক = ঘুরুক
দেখ্ + উক = দেখুক
রাখ্ + উক = রাখুক
মাখ্ + উক = মাখুক
ডাক্ + উক = ডাকুক
৪. নীচের সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ পার্থক্য দেখিয়ে প্রত্যেকটি ব্যবহার করে পৃথক পৃথক বাক্য রচনা করো ।
উত্তর : সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ :
ভরে – পূর্ণ হওয়া বা ভরানো
ভোরে – দিনের শুরুর সময় বা প্রভাত
ঘরে – বাড়িতে
ঘোরে – ঘুরে বেড়ায়
ছুঁয়ে – স্পর্শ করে
চুঁয়ে – ধীরে ধীরে পড়া
আনল – নিয়ে আসা
অনল – আগুন
মধুর – মিষ্টি বা আনন্দদায়ক
মেদুর – আবেগপূর্ণ বা করুণ
৫. পাশের শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দ বেছে নীচের ছকটি সম্পূর্ণ করো ।
মাটি, পিপীলিকা, যারা, ধুলা |
উত্তর :
পিপীলিকা > পিঁপড়ে
ধুলো > ধুলা
মৃত্তিকা > মাটি
যাহারা > যারা
৬. কবিতা থেকে সর্বনামগুলি খুঁজে বের করে আলাদা আলাদা বাক্যে ব্যবহার করো ।
উত্তর : কবিতা থেকে সর্বনামগুলি হল :
তার, ওই, কাউকে, ওকে, ওর, যারা, তার, সবাই ।
৭. নীচের স্তম্ভদুটি মেলাও :
বি | দিন |
প্রতি | স্মরণ |
অ | মধুর |
কু | চেনা |
সু | কথা |
উত্তর :
বি | স্মরণ |
প্রতি | দিন |
অ | চেনা |
কু | কথা |
সু | মধুর |
৮. কবিতা থেকে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়াগুলি খুঁজে নীচের খোপে যথাস্থানে বসাও :
উত্তর :
সমাপিকা | অসমাপিকা |
---|---|
ঘুরুক, দেখুক, থাকুক, রাখুক, মাখুক, জানে, আনল, ডাকুক, আছি, ঘিরেছে | লাগে, চলা, বলা, ছুঁয়ে, ভরে, করে, দিতে, নিতে, চলে |
৯. দুটি বাক্যে ভেঙে লেখো :
মাটির বুকে সবাই আছি এই দু-দিনের ঘরে তার স্মরণে সবাইকে আজ ঘিরেছে আদরে ।
উত্তর :
১) মাটির বুকে সবাই আছি এই দু-দিনের ঘরে ।
২) তার স্মরণে সবাইকে আজ ঘিরেছে আদরে ।
১০. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১০.১ পিঁপড়ের ভাষাহীন চলাচলের মধ্যে বিনিময়ের ভঙ্গিটি কেমন ?
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায়, পিঁপড়ের ভাষা নেই, কিন্তু তাদের চলাচলে একটি সুন্দর বিনিময়ের ভঙ্গি দেখা যায় । তারা পরস্পরের সঙ্গে মিলে কাজ করে, পরিশ্রম ভাগ করে নেয় এবং একে অপরকে সাহায্য করে । তাদের এই ভঙ্গি মধুর এবং একতা ও সহযোগিতার উদাহরণ ।
১০.২ ‘মাটির বুকে যারাই আছি এই দুদিনের ঘরে’ – ‘এই দু-দিনের ঘরে’ বলতে কী বোঝ ? কে সবাইকে কীভাবে ‘এই দু-দিনের ঘরে’ আদরে ঘিরে রাখে ?
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় ‘এই দু-দিনের ঘরে’ বলতে মানুষের অল্প সময়ের জীবনকে বোঝানো হয়েছে । কবি বলতে চেয়েছেন, পৃথিবীতে আমাদের জীবন খুবই সাময়িক ।
পিঁপড়ে তার কাজ, পরিশ্রম, আর বিনিময়ের মধুর ভঙ্গির মাধ্যমে সবাইকে আদরে ঘিরে রাখে । এটি আমাদের শেখায়, জীবনের এই ছোট সময়টুকুতে সবাইকে ভালোবাসা ও সহযোগিতার মাধ্যমে কাছে টেনে নেওয়া উচিত ।
১০.৩ এই কবিতায় কবির কীরূপ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে তা বুঝিয়ে দাও ।
উত্তর : কবি অমিয় চক্রবর্তীর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায়, কবির মনোভাব খুবই ভালোবাসাপূর্ণ, দয়ালু এবং সংবেদনশীল । কবি পিঁপড়ের ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন । তিনি পিঁপড়ের পরিশ্রম, একতা এবং প্রকৃতির সঙ্গে তার মিলকে মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন । কবি আমাদের শেখাতে চান যে, পৃথিবীতে ছোট-বড় সব জীবেরই গুরুত্ব আছে এবং তাদের ভালোবাসা ও সম্মান করা উচিত । কবিতায় মানবজীবনের অল্প সময়ের মূল্য বোঝানোর পাশাপাশি সকলের প্রতি দয়া ও আদরের মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে ।
১০.৪ বিভিন্ন রকমের পিঁপড়ে এবং তাদের বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনপ্রণালী সম্বন্ধে তোমার পর্যবেক্ষণগুলি একটি খাতায় লেখো । প্রয়োজনে ছবিও আঁকতে পারো ।
উত্তর : নিজে করো ।
১০.৫ একটি লাল পিঁপড়ে ও একটি কালো পিঁপড়ের মধ্যে একটি কাল্পনিক কথোপকথন রচনা করো ।
উত্তর : লাল পিঁপড়ে ও কালো পিঁপড়ের মধ্যে কথোপকথন :
লাল পিঁপড়ে : (খাদ্যের টুকরো টেনে নিয়ে যাচ্ছে) আরে কালো ভাই, কোথায় যাচ্ছ ?
কালো পিঁপড়ে : (হেসে) কী আর, খাবার খুঁজতে বেরিয়েছি । তুমি কী নিয়ে যাচ্ছ ?
লাল পিঁপড়ে : একটা মিষ্টির টুকরো পেয়েছি, আমাদের রানীকে দেবো । রানী তো খুশি হবে !
কালো পিঁপড়ে : আহা ! তোমরা তো সবসময় মিষ্টি খাও । আমরা কিন্তু তেমন পাই না ।
লাল পিঁপড়ে : (গর্ব করে) আমরা একটু সাহসী, তাই খাবার খুঁজতে দূরে দূরে যাই । তুমি কী খুঁজছো ?
কালো পিঁপড়ে : (হালকা হাসি) আমরা যা পাই, তাই খাই । ফলের খোসা, গাছের রস – সবই চলে । তবে তোমাদের মতো এত সাহস আমাদের নেই ।
লাল পিঁপড়ে : (পরামর্শ দিয়ে) সাহস না থাকলে হবে কী করে ? আমাদের মতো চেষ্টা করো, দেখবে অনেক কিছু পাবে ।
কালো পিঁপড়ে : (মৃদু হেসে) চেষ্টা করবো । তবে তোমাদের মতো মিষ্টি না পেলেও আমরা নিজেদের মতো খুশি ।
লাল পিঁপড়ে : (মুচকি হেসে) সেটাই তো ভালো । যার যা আছে, তাতেই খুশি থাকা উচিত । আচ্ছা, কালো ভাই, এবার চলি । রানী অপেক্ষা করছে ।
কালো পিঁপড়ে : (হাসি দিয়ে) ঠিক আছে, যাও । আবার দেখা হবে । সাবধানে থেকো !
লাল পিঁপড়ে : (বিদায় জানিয়ে) তুমিও ভালো থেকো । দেখা হবে আবার !
Follow us:
If you like this article, you can Follow us on Facebook.
Also, you can Subscribe to our YouTube Channel.