মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র – প্রশ্ন ও উত্তর | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) অনুমোদিত ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই “সাহিত্যমেলা” । এখানে লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পটির প্রশ্ন ও উত্তর (হাতে কলমে) আলোচনা করা হল ।

মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র – প্রশ্ন ও উত্তর

১.১ লেখক তপন করের লেখা একটি বই-এর নাম লেখো ।

উত্তর : লেখক তপন করের লেখা একটি বই-এর নাম ‘অসামান্য মানভূম’ ।

১.২ পাঠ্য রচনাংশটি কোন বিষয়ে লেখা ?

উত্তর : পাঠ্য রচনাংশটি মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র বিষয়ে লেখা ।

Read Also:

মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র – গল্প | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা

২. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে লেখো :

২.১ দেওয়াল চিত্র এঁকে থাকেন সাধারণত গ্রামের (পুরুষেরা/ মেয়েরা/ বালকেরা) ।

উত্তর : দেওয়াল চিত্র এঁকে থাকেন সাধারণত গ্রামের মেয়েরা ।

২.২ মূলত (বৃত্তাকার/ সরলরৈখিক/ জ্যামিতিক) আকার-আশ্রিত বর্ণসমাবেশেই রচিত হয় সাঁওতালী দেয়ালচিত্রণ ।

উত্তর : মূলত জ্যামিতিক আকার-আশ্রিত বর্ণসমাবেশেই রচিত হয় সাঁওতালী দেয়ালচিত্রণ ।

২.৩ সাধারণত মাটি থেকে (ছ’ফুট/ চারফুট/ আটফুট) পর্যন্ত উচ্চতায় চিত্রণটি বিস্তৃত হয় ।

উত্তর : সাধারণত মাটি থেকে ছ’ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় চিত্রণটি বিস্তৃত হয় ।

২.৪ (শালুকটিকে/ পদ্মটিকে/ গোলাপটিকে) মানভূম দেয়ালচিত্রের প্রতীক বলা হয় ।

উত্তর : পদ্মটিকে মানভূম দেয়ালচিত্রের প্রতীক বলা হয় ।

৩. পাঠ থেকে একই অর্থের শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো :

ছবি, জোগাড়, পঙ্কজ, পুষ্প, মাটি ।

উত্তর : পাঠ থেকে একই অর্থের শব্দ :

ছবি – চিত্র
জোগাড় – সংগ্রহ
পঙ্কজ – পদ্ম
পুষ্প – ফুল
মাটি – মৃত্তিকা

৪. নীচের বিশেষ্যশব্দগুলিকে বিশেষণ এবং বিশেষণশব্দগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো :

ভৌগোলিক, নির্বাচন, অঞ্চল, রচিত, অলংকার, জ্যামিতি ।

উত্তর :

বিশেষ্যবিশেষণ
ভূগোলভৌগোলিক
নির্বাচননির্বাচিত
অঞ্চলআঞ্চলিক
রচনারচিত
অলংকারঅলংকৃত
জ্যামিতিজ্যামিতিক

৫. তোমাদের এই পাঠ্যাংশ থেকে দুটি জটিল বাক্য লেখো যারা যুক্ত আছে ‘যেমন-তেমন’ দিয়ে । এছাড়া, ‘যদি-তবে’, ‘যখন-তখন’, ‘যে-সে’, ‘যেখানে-সেখানে’, ‘যেদিন সেদিন’ ইত্যাদি ব্যবহার করে একটি করে জটিল বাক্য লেখো ।

উত্তর :

যেমন-তেমন: বাড়ির দেয়ালগুলিতে যেমন-তেমন ছবি আঁকা হয় না, বরং নির্দিষ্ট নকশা এবং উপকরণ দিয়ে সুন্দরভাবে চিত্রণ করা হয় ।

যদি-তবে: যদি তোমরা সময় পেতে, তবে আমরা একসাথে দেয়ালচিত্র আঁকার জন্য পরিকল্পনা করতে পারব ।

যখন-তখন: যখন-তখন দেয়ালচিত্র আঁকা হয় না, বিশেষ উৎসব বা বিশেষ দিনে চিত্রণ করা হয় ।

যে-সে: যে-সে ব্যক্তি দেয়ালচিত্র আঁকতে পারে না, এর জন্য বিশেষ দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা প্রয়োজন ।

যেখানে-সেখানে: তাদের দেয়ালচিত্র যেখানে-সেখানে আঁকা হয় না, বরং সঠিক স্থান এবং পরিবেশ নির্বাচন করে চিত্রণ করা হয় ।

যেদিন সেদিন: যেদিন সেদিন মাটির ঘরের দেয়ালচিত্র আঁকা হয়, সেদিন ঘরের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পায় ।

৬. নীচের বাক্যগুলি জুড়ে একটি বাক্যে পরিণত করো :

৬.১ এই মাটির রং ঈষৎ হরিদ্রাভ । এই মাটির রং ঈষৎ সাদাটে ।

উত্তর : এই মাটির রং ঈষৎ হরিদ্রাভ এবং সাদাটে ।

৬.২ দূর থেকে দৃশ্য হিসেবে মানানসই হওয়া চাই । এই ভাবেই দেয়ালগুলি নির্বাচন করা হয় ।

উত্তর : দূর থেকে দৃশ্য হিসেবে মানানসই দেয়ালগুলি নির্বাচন করা হয় ।

৬.৩ ঘরের চতুষ্পার্শ্ব ঘিরে থাকে একটি বেদী । তার রং কালো ।

উত্তর : ঘরের চতুষ্পার্শ্ব ঘিরে থাকে একটি কালো রঙের বেদী ।

৬.৪ বাংলার কৃষিজীবী সমাজের কিছু প্রাচীন উৎসব আছে । এগুলি হলো গো-বন্দনা, কাঁড়াখুঁটা, গোরুখুটা প্রভৃতি ।

উত্তর : বাংলার কৃষিজীবী সমাজের প্রাচীন উৎসবগুলি হলো গো-বন্দনা, কাঁড়াখুঁটা, গোরুখুঁটা প্রভৃতি ।

৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

৭.১ তোমার জানা কোন অঞ্চলের লোকসমাজে দেয়ালে ছবি আঁকার চল আছে ?

উত্তর : আমার জানা মতে, পুরুলিয়া জেলা এবং এর আশেপাশের অঞ্চলের লোকসমাজে দেয়ালে ছবি আঁকার চল আছে । এই এলাকায় সাঁওতাল, ভূমিজ, খেড়িয়া, মাহাত, শবর প্রভৃতি গোষ্ঠীর মানুষরা মাটির ঘরের দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের চিত্র অঙ্কন করে । এছাড়া মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমান, এবং বীরভূম জেলার পশ্চিম অংশেও দেয়ালচিত্রের প্রচলন দেখা যায় ।

৭.২ মানভূম জেলা সংলগ্ন আর কোন কোন জেলায় দেয়াল চিত্রণ হয়ে থাকে ?

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে মানভূম জেলা সংলগ্ন যেসব জেলায় দেয়ালচিত্রণ হয়ে থাকে সেগুলো হলো মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমানের পশ্চিম অংশ এবং বীরভূম জেলা । এই এলাকাগুলোর লোকসমাজে দেয়ালচিত্র আঁকার প্রথা প্রচলিত রয়েছে ।

৭.৩ মানভূম জেলায় কোন কোন আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস ?

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে মানভূম জেলায় সাঁওতাল, হো, অসুর, ভূমিজ, মুন্ডা, ওঁরাও, খেড়িয়া, শবর, কোল এবং বীরহড় প্রভৃতি আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস রয়েছে ।

৭.৪ মাটির দেয়াল চিত্রগুলি সাধারণত কোন কোন উৎসবে আঁকা হয় ?

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে মাটির দেয়াল চিত্রগুলি সাধারণত আশ্বিনের দুর্গাপূজা এবং কার্তিকের অমাবস্যা বা দীপাবলি উৎসবকে কেন্দ্র করে আঁকা হয় । এই সময় ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দেয়াল সাজানোর রীতি প্রচলিত ।

৭.৫ দেয়াল চিত্র করার জন্য কী কী উপাদান ব্যবহৃত হয় ?

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে দেয়াল চিত্র করার জন্য প্রধানত লালচে গিরিমাটি বা গৈরিক বর্ণের মাটি ব্যবহার করা হয় । এছাড়া বিভিন্ন রঙ, যেমন সাদা, আকাশি, গেরুয়া, হলুদ ইত্যাদি রঙ ব্যবহার করা হয় । দেয়ালের মসৃণতা বাড়াতে দুধেমাটি (হালকা হলুদাভ বা সাদাটে বেলেমাটি) দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হয় । চিত্র আঁকার সময় হাতের আঙুলের ডগা দিয়ে নকশা করা হয় । মাটি, রঙ, এবং স্থানীয় প্রাকৃতিক উপকরণই মূলত ব্যবহৃত হয় ।

৭.৬ কোন তিথিতে কৃষিজীবীরা কীভাবে তাদের গৃহসজ্জা করে তা লেখো ।

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে কার্তিকের অমাবস্যা, যা কালীপূজার তিথি হিসেবে পরিচিত, এই সময় কৃষিজীবীরা তাদের গৃহসজ্জা করে । তারা ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে, মেরামত করে এবং নতুন মাটি দিয়ে লেপে দেয় । এরপর গৃহের প্রবেশদ্বার, উঠান, গোয়ালঘর, ধানের গোলা এবং বাসগৃহের বিভিন্ন অংশে আলপনা এঁকে সাজায় । এই আলপনাগুলি জ্যামিতিক নকশা, পদ্মফুল, মোরগঝুঁটি, এবং লতাপাতার মোটিফ দিয়ে তৈরি হয় । এটি তাদের ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি উৎসবের আবহ তৈরি করে ।

৭.৭ কোন কোন জাতির দেয়াল চিত্রের সাধারণ লক্ষণ পদ্ম ?

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে ভূমিজ, কুর্মি এবং অন্যান্য কিছু গোষ্ঠীর দেয়াল চিত্রের সাধারণ লক্ষণ হলো পদ্ম । তারা বৃত্তের মধ্যে ক্রমাগত ছোট ছোট বৃত্ত এঁকে পদ্মফুলের আকৃতি তৈরি করে এবং সেই পাপড়িগুলি বিচিত্র রঙে ভরে দেয় । পদ্ম চিত্র তাদের দেয়ালচিত্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ।

৭.৮ দুধেমাটির ওপর কী ভাবে চিত্রণ করা হয় ?

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে দুধেমাটি, যা হালকা হলুদাভ বা সাদাটে বেলেমাটি, দেয়ালের ওপর মসৃণ প্রলেপ হিসেবে লাগানো হয় । যখন দুধেমাটি ভেজা অবস্থায় থাকে, তখন হাতের আঙুলের ডগা দিয়ে সরাসরি নকশা বা চিত্র আঁকা হয় । এই পদ্ধতিতে মাটি ভেজা থাকার সময়েই নকশা তৈরি করা হয়, যা দেয়ালচিত্রে একটি বিশেষ সৌন্দর্য যোগ করে ।

৭.৯ মোরগঝুঁটির চালচিত্রে আর কী কী নকশা থাকে ?

উত্তর : লেখক তপন করের ‘মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র’ গল্পে মোরগঝুঁটির চালচিত্রে বিভিন্ন ধরনের নকশা থাকে । এর চারপাশে উদীয়মান সূর্যের নকশা এবং সূর্যের ফাঁকে ফাঁকে আধফোটা পদ্ম আঁকা হয় । এছাড়া নকশার শূন্যস্থান পূরণ করতে ছোট ছোট মোটিফ যেমন পদ্ম, ইস্কাবন, হরতনের চিহ্ন, লতাপাতা, পাখি, ময়ূর ইত্যাদি আঁকা হয় । এই নকশাগুলি বিভিন্ন রঙের সমাবেশে তৈরি হয়, যা চিত্রটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে ।

৮. বৃত্তাকার একটি নক্শা বা আলপনা আঁকো যা তোমার বাড়িকে আরও সুন্দর করে তুলবে ।

উত্তর : নিজে করো ।

Follow us:

If you like this article, you can Follow us on Facebook.
Also, you can Subscribe to our YouTube Channel.

Leave a Reply