হাট – প্রশ্ন ও উত্তর | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) অনুমোদিত ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই “সাহিত্যমেলা” । এখানে কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতাটির প্রশ্ন ও উত্তর (হাতে কলমে) আলোচনা করা হল ।

হাট – প্রশ্ন ও উত্তর

১.১ কোন সাহিত্যিক-গোষ্ঠীর সঙ্গে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ?

উত্তর : কল্লোল সাহিত্যিক-গোষ্ঠীর সঙ্গে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ।

১.২ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো ।

উত্তর : তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম হল মরীচিকা এবং ত্রিযামা ।

Read Also:

হাট – কবিতা | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা

২. নীচের বাক্যগুলি থেকে এমন শব্দ খুঁজে বের করো যায় প্রতিশব্দ কবিতার মধ্যে আছে । কবিতার সেই শব্দটি পাশে লেখো :

২.১. ‘আঁধার-সাঁঝে বনের মাঝে উল্লাসে প্রাণ ঢেলেছে ।’

উত্তর : সাঁঝে – সন্ধ্যায়

২.২. ‘আলো, আমার আলো, ওগো আলো ভুবন-ভরা ।’

উত্তর : আলো – আলোক

২.৩. ‘তুমি আমার সকালবেলার সুর ।’

উত্তর : সকালবেলা – প্রভাত

২.৪. ‘আমার রাত পোহাল শারদ-প্রাতে ।’

উত্তর : রাত – নিশা

২.৫. ‘দিনেরবেলা বাঁশী তোমার বাজিয়েছিল ।’

উত্তর : দিনেরবেলা – দিবস

৩. সমোচ্চারিত বা প্রায়-সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দযুগলের অর্থপার্থক্য দেখাও :

উত্তর : সমোচ্চারিত বা প্রায়-সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ :

দীপ – প্রদীপ বা আলো জ্বালানোর বস্তু
দ্বীপ – চারদিকে জলবেষ্টিত ভূমি

দর – মূল্য বা দাম
দড় – মজবুত বা শক্ত

শাখ – গাছের ডাল
শাঁখ – শঙ্খ বা বাজানোর বস্তু

বাধা – প্রতিবন্ধকতা বা অবরোধ
বাঁধা – বেঁধে রাখা বা নির্ধারিত

নিত্য – প্রতিদিন বা চিরকালীন
নৃত্য – নাচ

৪. নীচের শব্দগুলি গদ্যে ব্যবহার করলে কেমন হবে লেখো :

সহিয়া, সেথা, সহি, সবে, তবে, মুদিল ।

উত্তর :

সহিয়া – সহ্য করে
সেথা – সেখানে
সহি – সহ্য করি
সবে – সবাই বা সকলে
তবে – কিন্তু বা তাহলে
মুদিল – বন্ধ হলো বা ঢেকে গেল

৫. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখো :

৫.১ কতগুলি গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে ?

উত্তর : কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় দশ-বারোটা গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে ।

৫.২ হাটে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না কেন ?

উত্তর : কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় হাটে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না কারণ সন্ধ্যার পর হাট ফাঁকা হয়ে যায় ।

৫.৩ কার ডাকে রাত্রি নেমে আসে ?

উত্তর : কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় একক কাকের ডাকে রাত্রি নেমে আসে ।

৫.৪ ও পারের লোক কেন এ পারেতে আসে ?

উত্তর : কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় ও পারের লোক পসরা সাজিয়ে এপারে বিক্রি করতে আসে ।

৫.৫ ‘হিসাব নাহিরে – এলো আর গেল কত ক্রেতা বিক্রেতা ।’ – কোনো হিসাব নেই কেন ?

উত্তর : কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার আসা-যাওয়া নিয়মিত এবং অনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় কোনো হিসাব রাখা সম্ভব নয় ।

৬. কবিতায় বর্ণিত হাটের চেহারাটি কেমন লেখো :

হাট বসার আগে, হাট চলাকালীন, হাট ভাঙার পর

উত্তর :

হাট বসার আগেহাট চলাকালীনহাট ভাঙার পর
হাট বসার আগে চারদিকে নিস্তব্ধতা থাকে । বিক্রেতারা দূর-দূরান্ত থেকে তাদের পসরা নিয়ে আসে । পাখি আর বাতাসের শব্দের মধ্যে প্রস্তুতির চিত্র দেখা যায় ।হাট চলাকালীন জায়গাটি প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে । চেনা-অচেনা মানুষের ভিড়ে কোলাহল শুরু হয় । জিনিসপত্র কেনাবেচা, দর-কষাকষি, আনন্দ আর ব্যস্ততার মেলবন্ধন ঘটে । এটি যেন জীবনের এক চলমান চিত্র ।হাট ভাঙার পর জায়গাটি ফাঁকা ও নির্জন হয়ে যায় । ক্রেতা-বিক্রেতারা ফিরে যায় যার যার ঘরে । শুধু পড়ে থাকে ছিন্ন চিহ্ন আর নিস্তব্ধ পরিবেশ । রাতের অন্ধকারে হাট নিস্তব্ধ হয়ে যায়, যেখানে শুধু বাতাস আর একক কাকের ডাক শোনা যায় ।

৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :

৭.১ হাটের স্থান ছাড়িয়ে দূরের গ্রামের ছবি কীভাবে কবিতায় ফুটে উঠেছে ?

উত্তর : হাটের স্থান ছাড়িয়ে দূরের গ্রামের ছবি কবিতায় যেভাবে ফুটে উঠেছে :

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় বলা হয়েছে, দশ-বারোটি গ্রামের মাঝে একটা হাট বসে । দিনের বেলা গ্রামের মানুষ হাটে আসে কেনাবেচা করতে । বিকেলে সবাই হাট শেষ করে ঘরে ফিরে যায় । সন্ধ্যার পর দূরের গ্রামগুলোতে প্রদীপ জ্বলে, আর হাট অন্ধকারে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে । এইভাবে হাট ও দূরের গ্রামগুলোর জীবনের সম্পর্ক কবিতায় সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে ।

৭.২ প্রকৃতির ছবি কীরূপ অসীম মমতায় কবিতায় আঁকা হয়েছে – তা আলোচনা করো ।

উত্তর : প্রকৃতির ছবি কীরূপ অসীম মমতায় কবিতায় আঁকা হয়েছে :

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় প্রকৃতির ছবি খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । দিনের বেলা হাটের চারপাশে কোলাহলময় পরিবেশ, পুবের মাঠে বকের উড়ে যাওয়া, আর বিকেলে সূর্যের আলো লুকিয়ে পড়ার দৃশ্য প্রকৃতির সৌন্দর্যকে তুলে ধরে ।

রাতের সময় হাটের নিস্তব্ধতা, দূরের গ্রামের দীপশিখা, আর নদীর বাতাসের প্রশান্তি প্রকৃতির অসীম মমতার প্রতিচ্ছবি । শাখায় বসা ক্লান্ত কাক আর বাতাসে জীর্ণ বাঁশের বাঁশির সুর প্রকৃতিকে জীবন্ত করে তোলে । এইসব চিত্র প্রকৃতির শান্তি ও সৌন্দর্যকে কবিতায় অসীম মমতায় তুলে ধরে ।

৭.৩ ‘বাজে বায়ু আসি বিদ্রুপ-বাঁশি’ – কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?

উত্তর : ‘বাজে বায়ু আসি বিদ্রুপ-বাঁশি’ – কবির এমন মনে হওয়ার কারণ :

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় হাট ভেঙে যাওয়ার পর চারপাশে নীরবতা নেমে আসে । শুধু বাতাস জীর্ণ বাঁশের ফাঁক দিয়ে বয়ে যায়, যা একটি ফাঁকা ও শূন্যতার অনুভূতি তৈরি করে । এই শূন্যতার মধ্যে বাতাসের শব্দকে কবি বিদ্রুপ-বাঁশির মতো মনে করেছেন, কারণ এটি যেন হাটের নিস্তব্ধতা আর একাকিত্বকে ব্যঙ্গ করছে । এটি হাটের প্রাণচঞ্চল পরিবেশের সঙ্গে গভীর বিরোধ সৃষ্টি করে, যা কবির মনে এই অনুভূতির জন্ম দিয়েছে ।

৭.৪ ‘উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে চিরকাল একই খেলা ।’ – কোন প্রসঙ্গে কবি আলোচ্য পঙক্তিটি লিখেছেন ? তিনি এখানে কোন ‘খেলা’-র কথা বলেছেন ? ‘চিরকাল’ চলে বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

উত্তর : ‘উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে চিরকাল একই খেলা ।’ – প্রশ্নের উত্তর :

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় কবি এই পঙক্তিটি হাটের চিরন্তন চলমানতার প্রসঙ্গে লিখেছেন । তিনি এখানে হাটের জীবনধারার খেলার কথা বলেছেন ।

তিনি এখানে ‘খেলা’-র অর্থে বলেছেন :
হাটে প্রতিদিন মানুষ আসে, কেনাবেচা করে, এবং ফিরে যায় । এটি একটি নিরন্তর চক্র, যেখানে নতুন ক্রেতা-বিক্রেতা আসেন, পসরা বসে, আর হাট শেষ হলে সবাই ঘরে ফিরে যায় । এই আসা-যাওয়ার চক্রকেই কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় ‘খেলা’ বলেছেন ।

‘চিরকাল’ চলে অর্থে কবি বোঝাতে চেয়েছেন :
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘হাট’ কবিতায় বোঝাতে চেয়েছেন, এই খেলা কখনো থামে না । যুগের পর যুগ ধরে হাট বসে, মানুষ আসে যায়, কিন্তু হাটের এই জীবনচক্র একই থাকে । এটি প্রকৃতির নিয়মের মতো চিরন্তন এবং অবিরাম ।

৭.৫ তোমার দেখা কোনো হাটের/ বাজারের অভিজ্ঞতা জানিয়ে দূরে থাকে এমন কোনো বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লেখো ?

উত্তর :

কলকাতা, ২৬/০২/২০২৪

প্রিয় [বন্ধুর নাম],

আশা করি তুমি ভালো আছো । আজ তোমাকে আমার দেখা একটি হাটের অভিজ্ঞতা জানাতে চাই । কয়েকদিন আগে আমাদের গ্রামের কাছের একটি হাটে গিয়েছিলাম ।

হাটটি সকাল থেকেই জমজমাট ছিল । গ্রামের মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে তাদের নানা ধরনের জিনিসপত্র নিয়ে এসেছিল । কেউ সবজি, কেউ মাছ, কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করছিল । ছোট ছোট দোকানগুলোতে খেলনা, মাটির পাত্র, এবং রঙিন জামা কাপড় বিক্রি হচ্ছিল । সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল, সবাই দর-কষাকষি করছিল ।

আমি হাটের মিষ্টির দোকানে গিয়ে গরম গরম জিলাপি খেয়েছিলাম । এরপর কাঁচা সবজি আর মাছ কিনতে মায়ের সঙ্গে ঘুরলাম । পুরো হাটের পরিবেশটা খুব মজার ছিল । মানুষজনের কোলাহল, গরুর ডাক, আর নানা জিনিসের গন্ধ সব মিলিয়ে এক আলাদা আনন্দ ।

হাট ভাঙার সময় সবাই তাদের কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরছিল । দোকানদাররাও ধীরে ধীরে জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছিল । আমি অনেক মজা পেয়েছি ।

তোমার কী খবর ? চিঠি পেলে জানিও । তোমার সঙ্গে শিগগিরই দেখা হবে আশা করি ।

ইতি তোমার বন্ধু,
[তোমার নাম]

৭.৬ তোমার দেখা একটি হাট বা বাজারের ছবি তুমি এঁকে দেখাও ৷

উত্তর : ৭.৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর তোমরা নিজেরা করো । তোমাদের উত্তর এই পোষ্টের Comment Section-এ অথবা YouTube Channel এর ‘হাট’ কবিতাটির প্রশ্ন ও উত্তর ভিডিও-এর Comment Section-এ আমাদের পাঠাতে পারো ।

৭.৭ এখন ‘হাট’ ও ‘বাজার’-এর মধ্যে কোনো তফাত খুঁজে পাও ? এ বিষয়ে তোমার মতামত জানিয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো ।

উত্তর : হ্যাঁ, ‘হাট’ ও ‘বাজার’-এর মধ্যে তফাত খুঁজে পাওয়া যায় :

১) হাট সাধারণত নির্দিষ্ট দিনে বসে এবং অস্থায়ী হয়, যেখানে বাজার প্রতিদিন খোলা থাকে এবং স্থায়ী হয় ।
২) হাট মূলত গ্রামীণ অঞ্চলে বসে এবং মানুষ সেখান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাবেচা করে, অন্যদিকে বাজার শহর বা গ্রাম উভয় এলাকায় থাকে এবং সেখানে জিনিসপত্রের পাশাপাশি নানা ধরনের সেবা পাওয়া যায় ।
৩) হাটে স্থানীয় কৃষক বা কারিগরের তৈরি পণ্য বেশি পাওয়া যায়, কিন্তু বাজারে বড় বড় দোকানে বহুজাতিক কোম্পানির পণ্যও পাওয়া যায় ।
৪) হাট সাধারণত খোলা জায়গায় বসে, যেখানে বাজার অনেক সময় ছাদ বা দোকানের ভেতরে হয় ।
৫) হাট মানুষের মাঝে সামাজিক মেলামেশার জায়গা হিসেবেও পরিচিত, কিন্তু বাজার মূলত কেনাকাটার জন্যই ব্যবহৃত হয় ।

Follow us:

If you like this article, you can Follow us on Facebook.
Also, you can Subscribe to our YouTube Channel.

Leave a Reply