চিঠি – প্রশ্ন ও উত্তর | ষষ্ঠ শ্রেণি | সাহিত্যমেলা

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) অনুমোদিত ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই “সাহিত্যমেলা” । এখানে কবি জসীমউদ্দিনের ‘চিঠি’ কবিতাটির প্রশ্ন ও উত্তর (হাতে কলমে) আলোচনা করা হল ।

চিঠি – প্রশ্ন ও উত্তর

১.১ কবি জসীমউদ্দিনকে বাংলা কাব্য জগতে কোন অভিধায় অভিহিত করা হয়েছে ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনকে বাংলা কাব্য জগতে ‘পল্লিকবি’ অভিধায় অভিহিত করা হয়েছে ।

১.২ তাঁর লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো ।

উত্তর : তাঁর লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম হল ‘রাখালী’ এবং ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ ।

২. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

২.১ কবি কার কার থেকে চিঠি পেয়েছেন ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় কবি লাল মোরগ, চখাচখি, বাবুই পাখি, বর্ষার মাঠ, মেঘের ডাক এবং খোকা ভাইয়ের কাছ থেকে চিঠি পেয়েছেন ।

২.২ লাল মোরগের পাঠানো চিঠিটি কেমন ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় লাল মোরগের পাঠানো চিঠি ভোর-জাগানোর সুরে ভরা, যেখানে শিশিরভেজা সকালে উষার রঙিন হাসি ধরা পড়েছে ।

২.৩ চখাচখি কেমন চিঠি পাঠিয়েছে ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় চখাচখি বালুচরে ঝিকিমিকি আলো আর ঢেউয়ের খেলা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে বর্ষার ঢেউ নানা কথা লিখে গেছে ।

২.8 গাঙশালিক তার চিঠিতে কী বলেছে ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় গাঙশালিক তার চিঠিতে গাঙের পাড়ের মোড়ল হওয়ার কথা বলেছে এবং জলধারার কলকল শব্দে আসরের কথা ভাসিয়ে দিয়েছে ।

২.৫ বাবুই পাখির বাসার থেকে আসা চিঠিটি কেমন ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় বাবুই পাখির বাসা থেকে আসা চিঠি ধানের পাতায় ও তালের পাতায় বুনট-করা নকশায় ভরা, যা খুব সুন্দর ও শিল্পময় ।

২.৬ কোড়াকুড়ীর পাঠানো চিঠিটির বর্ণনা দাও ।

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় কোড়াকুড়ীর পাঠানো চিঠি বর্ষাকালের ফসলের ক্ষেতে জলধারায় ভেজা সবুজ পাতার নাচে ভরা, যা আনন্দময় ও প্রাণবন্ত ।

২.৭ কার চিঠি পাওয়ায় কবির মনে হয়েছে নিখিল বিশ্ব তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছে ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় খোকা ভাইয়ের চিঠি পেয়ে কবির মনে হয়েছে নিখিল বিশ্ব তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছে ।

২.৮ এই কবিতায় কোন ঋতুর প্রসঙ্গ রয়েছে ?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় বর্ষা ঋতুর পাশাপাশি শীত ঋতুর প্রসঙ্গও রয়েছে ।

২.৯ কবিতায় অন্য ঋতুর পটভূমি সত্ত্বেও খোকাভাই-এর চিঠির লেখনখানি ‘শীতের ভোরের রোদের মতো’ মিঠে মনে হওয়ার তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও ।

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় অন্য ঋতুর পটভূমি সত্ত্বেও খোকা ভাইয়ের চিঠি কবির মনে ভালোবাসা ও আনন্দের উষ্ণতা এনে দেয় । শীতের ভোরের রোদ যেমন নরম, মিঠে ও আরামদায়ক, তেমনই খোকা ভাইয়ের চিঠির ভাষা ও অনুভূতিও কবির মনে স্নিগ্ধতা ও মিষ্টি অনুভূতি জাগায় । তাই এই তুলনাটি উপযুক্ত ।

২.১০ ‘খুশির নূপুর ঝুমুর-ঝামুর বাজছে আমার নিরালাতে’ – পঙ্ক্তিটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় এই পঙ্ক্তিতে কবি বলতে চেয়েছেন, খোকা ভাইয়ের চিঠি পড়ে তার মন আনন্দে ভরে উঠেছে । সেই আনন্দ যেন নূপুরের মিষ্টি ঝুমঝুম শব্দের মতো কবির নির্জন মনকে সুরে ভরিয়ে দিয়েছে ।

৩. কবিতা থেকে এমন তিনটি শব্দ খুঁজে বের করো যা কোনও ধ্বনির অনুকরণে তৈরি । একটি উদাহরণ দেওয়া হলো । যেমন : কল কল ।

উত্তর : কবিতা থেকে এমন তিনটি শব্দ যা কোনও ধ্বনির অনুকরণে তৈরি – কিচিরমিচির, গুরু গুরু, ঝুমুর-ঝামুর ।

৪. শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দ নিয়ে শূন্যস্থানে বসাও :

স্রোতে, রঙ্গিন, কাঁদন, গাঙ

উত্তর :

রঙ্গিন > রঙিন
গঙ্গা > গাঙ
স্রোতে > সোঁতে
ক্রন্দন > কাঁদন

৫. ‘ঢেউ-এ ঢেউ-এ’ এখানে ‘ঢেউ-এ’ শব্দটি পরপর দু’বার ব্যবহার হওয়ায় অর্থ দাঁড়িয়েছে, অজস্র ঢেউ-এ’ । অর্থাৎ একই শব্দ পরপর দু’বার ব্যবহারে বহু বচনের ভাব তৈরি হয়েছে । এই কবিতাটি থেকে আরও তিনটি অংশ উদ্ধৃত করো যেখানে এমন ঘটেছে ।

উত্তর : একই শব্দ পরপর দু’বার ব্যবহারে বহু বচনের ভাব তৈরি হয়েছে, এমন এই কবিতাটি থেকে আরও তিনটি অংশ হল – মেঘের কাঁদন গুরু গুরু, পাখিরা সব ঝাঁকে ঝাঁকে, খুশির নূপুর ঝুমুর-ঝামুর ।

৬. ‘গাঙের পাড়ের মোড়ল’ – শব্দবন্ধটিতে পরপর দু’বার ‘-এর’ সম্বন্ধ বিভক্তিটি এসেছে । কবিতা থেকে এমন আরও শব্দবন্ধ খুঁজে বের করো যেখানে পরপর দু’বার ‘র’ বা ‘এর’ বিভক্তি প্রয়োগে সম্বন্ধ পদ তৈরি হয়েছে ।

উত্তর : কবিতা থেকে এমন আরও শব্দবন্ধ যেখানে পরপর দু’বার ‘র’ বা ‘এর’ বিভক্তি প্রয়োগে সম্বন্ধ পদ তৈরি হয়েছে তা হল – লাল মোরগের ভোর-জাগানোর সুর-ভরা, চখাচখির বালুচরের ঝিকিমিকি, বাবুই পাখির বাসার থেকে ।

৭. ‘কর্তা-কর্ম-ক্রিয়া’ – পদক্রম অনুসারে নীচের বাক্যগুলিকে আবার লেখো :

৭.১ লিখে গেছে গাঙশালিকে গাঙের পাড়ের মোড়ল হ’তে ।

উত্তর : গাঙশালিকে গাঙের পাড়ের মোড়ল হ’তে লিখে গেছে ।

৭.২ ইহার সাথে পেলুম আজি খোকা ভাই-এর একটি চিঠি ।

উত্তর : খোকা ভাই-এর একটি চিঠি পেলুম ইহার সাথে ।

৭.৩ সবুজ পাতার আসরগুলি নাচছে জল-ধারায় মেতে ।

উত্তর : সবুজ পাতার আসরগুলি জল-ধারায় মেতে নাচছে ।

৭.৪ উদাস বাতাস আছড়ে বলে কে যেন বা চাইছে কাকে ।

উত্তর : উদাস বাতাস কে যেন বা চাইছে কাকে আছড়ে বলে ।

৭.৫ শীতের ভোরের রোদের মতো লেখনখানি লাগছে মিঠি ।

উত্তর : লেখনখানি মিঠি লাগছে শীতের ভোরের রোদের মতো ।

৮. নীচের বাক্যগুলিকে ভেঙে দুটি বাক্যে পরিণত করো :

৮.১ চিঠি পেলুম লাল মোরগের ভোর-জাগানোর সুরভরা ।

উত্তর :

১) চিঠি পেলুম লাল মোরগের কাছ থেকে ।
২) সেই চিঠি ভোর-জাগানোর সুরে ভরা ।

৮.২ সবুজ পাতার আসরগুলি নাচছে জল-ধারায় মেতে ।

উত্তর :

১) সবুজ পাতার আসরগুলি নাচছে ।
২) আসরগুলি জল-ধারায় মেতে নাচছে ।

৮.৩ শীতের ভোরের রোদের মতো লেখনখানি লাগছে মিঠি ।

উত্তর :

১) লেখনখানি শীতের ভোরের রোদের মতো ।
২) লেখনখানি মিঠি লাগছে ।

৮.৪ আকাশ জুড়ে মেঘের কাঁদন গুরু গুরু দেয়ার ডাকে ।

উত্তর :

১) আকাশ জুড়ে মেঘের কাঁদন শোনা যাচ্ছে ।
২) সেই কাঁদন গুরু গুরু দেয়ার ডাকে ভরা ।

৮.৫ লিখে গেছে গাঙশালিকে গাঙের পাড়ের মোড়ল হ’তে ।

উত্তর :

১) গাঙশালিকে লিখে গেছে ।
২) সে গাঙের পাড়ের মোড়ল হতে চায় ।

৯. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

৯.১ কবি প্রকৃতির কোন-কোন প্রতিনিধির কাছ থেকে কেমন সমস্ত চিঠি পেয়েছিলেন, বিশদে লেখো ।

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় কবি প্রকৃতির নানা প্রতিনিধির কাছ থেকে চিঠি পেয়েছিলেন, এবং প্রতিটি চিঠি ছিল বিশেষ ও সুন্দর ।
লাল মোরগ: কবি লাল মোরগের কাছ থেকে ভোর-জাগানোর সুরে ভরা চিঠি পেয়েছিলেন । সেই চিঠিতে ছিল ভোরের শিশির আর ঊষার রঙিন হাসি ।

চখাচখি: চখাচখি বালুচরের ঝিকিমিকি আলো আর ঢেউয়ের খেলা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল । বর্ষার ঢেউ সেই চিঠিতে নানা কথা লিখে গিয়েছিল ।

গাঙশালিক: গাঙশালিকের চিঠিতে ছিল গাঙের পাড়ের মোড়ল হওয়ার কথা । তার সঙ্গে জলধারার কলকল শব্দের আসরের কথা ভাসিয়ে দিয়েছিল ।

বাবুই পাখি: বাবুই পাখির বাসা থেকে আসা চিঠি ধানের পাতায় ও তালের পাতায় বুনট-করা নকশায় ভরা ছিল, যা খুবই সুন্দর ।

কোড়াকুড়ী: বর্ষাকালের কোড়াকুড়ীর চিঠি ছিল সবুজ পাতার নাচে ভরা । সেই চিঠি আনন্দ ও প্রাণবন্ততায় মেতে উঠেছিল ।

মেঘ ও বাতাস: আকাশে জমে থাকা মেঘের গুরু গুরু ডাক আর উদাস বাতাসের শব্দও কবির কাছে চিঠির মতো মনে হয়েছিল ।

প্রকৃতির এই প্রতিনিধিদের চিঠি কবির মনে আনন্দ, শান্তি এবং গভীর অনুভূতি এনে দিয়েছিল ।

৯.২ খোকা ভাই-এর চিঠিটির প্রসঙ্গে কবি যে সমস্ত উপমা ও তুলনাবাচক শব্দ ব্যবহার করেছেন তাদের ব্যবহারের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও ।

উত্তর : কবি জসীমউদ্দিনের লেখা ‘চিঠি’ কবিতায় খোকা ভাই-এর চিঠিটির প্রসঙ্গে কবি যে সমস্ত উপমা ও তুলনাবাচক শব্দ ব্যবহার করেছেন তাদের ব্যবহারের সার্থকতা:

কবি খোকা ভাই-এর চিঠি পড়ে অনেক আনন্দ পেয়েছিলেন । এই চিঠি তার মনে ভালোবাসা, মধুরতা এবং শান্তি এনে দিয়েছিল । কবি চিঠির অনুভূতিগুলো বোঝাতে কয়েকটি সুন্দর উপমা ও তুলনাবাচক শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা খুবই সার্থক ।

“শীতের ভোরের রোদের মতো”:
চিঠির ভাষা এবং অনুভূতি কবির কাছে শীতের ভোরের মিঠে রোদ্দুরের মতো মনে হয়েছিল । শীতের সকালে নরম রোদ যেমন আরামদায়ক, তেমনই এই চিঠি কবির মনে স্নিগ্ধতা এনেছিল ।

“খুশির নূপুর ঝুমুর-ঝামুর বাজছে”:
চিঠি পড়ে কবির মনে আনন্দের ঢেউ উঠেছিল । সেই আনন্দ যেন নূপুরের মিষ্টি শব্দের মতো কবির মনকে ভরিয়ে তুলেছিল ।

এই উপমাগুলো চিঠির মধুরতা ও কবির অনুভূতিকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করেছে । এগুলো পাঠকের মনে চিঠির বিশেষত্ব আর কবির আনন্দ স্পষ্ট করে তোলে ।

৯.৩ তোমার প্রিয় বন্ধুকে তোমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের ঘটনাটি জানিয়ে একটি চিঠি লেখো ।

উত্তর :

কলকাতা, ২০/০১/২০২৪

প্রিয় [বন্ধুর নাম],

তোমার প্রতি অনেক ভালোবাসা । আশা করি তুমি ভালো আছো । আজ তোমার সঙ্গে আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের ঘটনাটি শেয়ার করতে চাই ।

গত সপ্তাহে আমাদের স্কুলে বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ছিল । আমি গান গাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম । জানো, আমি প্রথম স্থান অর্জন করেছি ! যখন আমার নাম ঘোষণা করা হলো, আমার আনন্দের সীমা ছিল না । সবাই আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে । মঞ্চে উঠে পুরস্কার নিতে গিয়ে আমি ভীষণ গর্ব অনুভব করেছি । এই দিনটি আমার জীবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ।

তোমার সঙ্গে এই আনন্দ ভাগ করে নিতে চেয়েছিলাম । তুমি কেমন আছো ? তোমার খবর শিগগিরই জানিও ।

ইতি তোমার বন্ধু,
[তোমার নাম]

Follow us:

If you like this article, you can Follow us on Facebook.
Also, you can Subscribe to our YouTube Channel.

Leave a Reply