পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) অনুমোদিত ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই “সাহিত্যমেলা” । এখানে লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পটির প্রশ্ন ও উত্তর (হাতে কলমে) আলোচনা করা হল ।
সেনাপতি শংকর – প্রশ্ন ও উত্তর
১.১ শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো ।
উত্তর : শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দুটি বইয়ের নাম – ‘সেনাপতি শংকর’ এবং ‘কুবেরের বিষয়আশয়’।
১.২ তিনি কোন বইয়ের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন ?
উত্তর : তিনি ‘শাহাজাদা দারাশুকো’ উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন ।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১ আকন্দবাড়ির স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা কোন কোন জায়গা থেকে পড়তে আসে ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে আকন্দবাড়ির স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ভেটুরিয়া, সাঁইবাড়ি, ঘোলপুকুর আর আকন্দবাড়ি থেকে পড়তে আসে ।
২.২ স্কুলের জানলা থেকে কী কী দেখা যায় ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে স্কুলের জানলা দিয়ে আকাশের মেঘ দেখা যায়, দেখা যায় পাখি উড়ছে ।
২.৩ শংকর কীসের স্বপ্ন দেখে ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকর স্বপ্ন দেখে শঙ্খচিলের মতো সে ঘোলপুকুরে গাব গাছের উঁচু ডাল থেকে ঝাঁপ দিচ্ছে বড়ো দিঘিতে । সোজা জলে না পড়ে সে শঙ্খচিলের মতো ভাসছে । ডানার বদলে দুহাতে বাতাস কেটে, পিছনে দু-পা ঠেলে এগিয়ে যাচ্ছে উঁচুতে ।
২.৪ শংকরের স্বপ্নে বাতাসের রং কী ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকরের স্বপ্নে বাতাসের রং নীলচে ।
২.৫ এমু ছাড়া উড়তে পারে না শুধু দৌড়তে পারে এমন একটি পাখির নাম লেখো ।
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে এমু ছাড়া উড়তে পারে না শুধু দৌড়তে পারে এমন একটি পাখির নাম উটপাখি ।
৩. গল্প থেকে একই অর্থযুক্ত শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো :
বিদ্যালয়, অনিল, জগৎ, একাগ্র-চিত্ত, পাখা, রোপণ করা ।
উত্তর : গল্প থেকে একই অর্থযুক্ত শব্দ :
বিদ্যালয় – স্কুল
অনিল – বাতাস
জগৎ – পৃথিবী
একাগ্র-চিত্ত – আনমনা
পাখা – ডানা
রোপণ করা – রোয়া
৪. বিপরীতার্থক শব্দ লিখে তা দিয়ে বাক্য রচনা করো :
ভিজে, রাত, বাইরে, গাঢ়, বিশ্বাস ।
উত্তর : বিপরীতার্থক শব্দ :
ভিজে – শুকনো
রাত – দিন
বাইরে – ভিতরে
গাঢ় – হাল্কা
বিশ্বাস – অবিশ্বাস
৪. নম্বর প্রশ্নের উত্তরের বাক্য রচনা তোমরা নিজেরা লেখো । তোমাদের লেখা উত্তর এই পোষ্টের Comment Section-এ অথবা YouTube Channel এর ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর ভিডিও-এর Comment Section-এ আমাদের পাঠাতে পারো ।
৫. সন্ধি বিচ্ছেদ করো :
বঙ্গোপসাগর, তন্ময়, সাবধান, ত্রিশেক, পঞ্চানন ।
উত্তর : সন্ধি বিচ্ছেদ :
বঙ্গোপসাগর = বঙ্গ + উপসাগর
তন্ময় = তদ্ + ময়
সাবধান = স + অবধান
ত্রিশেক = ত্রিশ + এক
পঞ্চানন = পঞ্চ + আনন
৬. নীচের শব্দগুলির কোনটি বিশেষ্য এবং কোনটি বিশেষণ তা খুঁজে নিয়ে আলাদা দুটি স্তম্ভে সাজাও । এরপর বিশেষ্যগুলির বিশেষণের রূপ এবং বিশেষণগুলির বিশেষ্যের রূপ লেখো :
প্রকৃতি, ব্যথা, মাটি, বিশ্বাস, জল, মাঠ, শব্দ ।
উত্তর :
বিশেষ্য | বিশেষণ |
---|---|
প্রকৃতি | প্রাকৃতিক |
ব্যথা | ব্যথিত |
মাটি | মেটে |
বিশ্বাস | বিশ্বাসী, বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য |
জল | জলীয় |
মাঠ | মেঠো |
শব্দ | শাব্দিক, শব্দময় |
৭. সমোচ্চারিত বা প্রায় সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ লিখে বাক্যে প্রয়োগ করো :
উত্তর : সমোচ্চারিত বা প্রায় সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ :
ভাষা – মত প্রকাশের মাধ্যম বা কথা বলার ক্ষমতা
ভাসা – ভেসে থাকা বা জলের উপর অবস্থান করা
পড়ে – নীচে নেমে যাওয়া বা স্থানচ্যুত হওয়া
পরে – পরিধান করে অথবা ভবিষ্যতে
শংকর – শিব
সংকর – মিশ্র
মাথা – মস্তক
মাতা – মা, জননী
বাঁশ – একটি দীর্ঘ ও খোলযুক্ত গাছ, যা কাঠামো বা অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়
বাস – থাকার স্থান বা বাসস্থান অথবা যানবাহন
৭. নম্বর প্রশ্নের উত্তরের বাক্য রচনা তোমরা নিজেরা লেখো । তোমাদের লেখা উত্তর এই পোষ্টের Comment Section-এ অথবা YouTube Channel এর ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর ভিডিও-এর Comment Section-এ আমাদের পাঠাতে পারো ।
৮. গল্পে বেশ কিছু পাখি ও গাছের নাম আছে । এই পাখি ও গাছের নামের তালিকা তৈরি করে এগুলি সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে নামের পাশে পাশে লেখো । প্রয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্য নাও । এগুলি ছাড়াও তোমার জানা আরও কিছু পাখি আর গাছের নাম, তাদের বৈশিষ্ট্য লিখে নীচের ছকটি পূরণ করো ।
উত্তর :
গল্পে উল্লেখিত পাখির নামের তালিকা ও তথ্য :
পাখির নাম | আকার | রং | ঠোঁট | লেজ | পা | ঝুঁটি |
---|---|---|---|---|---|---|
দুর্গা টুনটুনি | ছোটো | বেগুনি | সরু, লম্বা, বাঁকানো | ছোটো | সরু, লম্বা | নেই |
শঙ্খচিল | মাঝারি থেকে বড় | কালো, সাদা | বাঁকা, শক্ত | মাঝারি লম্বা, চওড়া | ছোট, শক্ত | নেই |
এমু | বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি | বাদামি ও ধূসর মিশ্রিত | ছোট, শক্ত | ছোট ও ঘন পালকযুক্ত | লম্বা, শক্তিশালী | ছোট কালো পালকের মতো |
বাজ | বড় শিকারি পাখি | বাদামি, সাদা এবং কালো ছোপ | বাঁকা, তীক্ষ্ণ | ছোট, চওড়া | শক্ত, ধারালো নখযুক্ত | নেই |
কাক | মাঝারি | পুরোপুরি কালো বা কালো ও ধূসর মিশ্রণ | শক্ত, মাঝারি লম্বা | ছোট | ছোট, শক্তিশালী | নেই |
মাছরাঙা | ছোট থেকে মাঝারি | নীল, সবুজ, সাদা এবং কমলা | লম্বা, ধারালো | ছোট | ছোট ও লালচে | কিছু প্রজাতিতে থাকে |
হাঁড়িচাচা | মাঝারি | কালো, সাদা | ছোট, বাঁকা | ছোট, চওড়া | মাঝারি লম্বা | নেই |
ডৌখোল | ছোট | সবুজ ও হলুদ মিশ্রণ | ছোট, বাঁকা | ছোট | ছোট | নেই |
পানকৌড়ি | মাঝারি | কালো এবং সবুজাভ | লম্বা, বাঁকা | মাঝারি লম্বা | জালিকাযুক্ত (জলে সাঁতার উপযোগী) | নেই |
তিতির | ছোট থেকে মাঝারি | কালো, বাদামি এবং সাদা | ছোট, শক্ত | ছোট | ছোট, লালচে ও শক্ত | নেই |
গল্পে উল্লেখিত গাছের নামের তালিকা ও তথ্য :
গাছের নাম | আকার | কী জাতীয় | পাতাগুলো কেমন | ফুল | ফল | কোথায় দেখেছ |
---|---|---|---|---|---|---|
নারকেল | লম্বা | পাম জাতীয় গাছ | সরু, লম্বা | ছোট, হলুদ বা সাদা, থোকায় থাকে | সবুজ বা বাদামি শক্ত খোলযুক্ত, ভেতরে জল ও শাঁস থাকে | সমুদ্র উপকূল, গ্রামাঞ্চলে |
গাব | মাঝারি থেকে বড় | ফলজ গাছ | গাঢ় সবুজ, মোটা ও চকচকে | ছোট, সাদা রঙের | ছোট, গোলাকার, পাকা হলে কালো হয় | গ্রামাঞ্চলে, বনাঞ্চলে |
সবেদা | ছোট থেকে মাঝারি | ফলজ গাছ | সরল, চকচকে সবুজ | ছোট, সাদা বা হলদে | গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির, খোসা বাদামি, ভেতরে মিষ্টি শাঁস থাকে | বাগানে বা গ্রামাঞ্চলে |
জাম | বড় | ফলজ গাছ | বড়, ডিম্বাকৃতি, সবুজ | ছোট, সাদা বা হলুদ | ছোট, গোলাকার, কালো বা বেগুনি | গ্রামাঞ্চলে, মাঠে বা বাড়ির আঙিনায় |
৮. নম্বর প্রশ্নের উত্তরে গল্পে উল্লেখিত পাখির ও গাছের নামের তালিকা ও তথ্য উপরে দেওয়া হয়েছে । এগুলি ছাড়াও তোমার জানা আরও কিছু পাখি আর গাছের নাম, তাদের বৈশিষ্ট্য তোমরা নিজেরা লেখো । তোমাদের লেখা উত্তর এই পোষ্টের Comment Section-এ অথবা YouTube Channel এর ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর ভিডিও-এর Comment Section-এ আমাদের পাঠাতে পারো ।
৯. নীচে কতগুলি উপসর্গ দেওয়া হলো । গল্প থেকে উপযুক্ত শব্দ খুঁজে নিয়ে এই উপসর্গগুলি যুক্ত করে কয়েকটি নতুন শব্দ তৈরি করো :
উপসর্গ | শব্দ | নতুন শব্দ |
---|---|---|
বি | জ্ঞান, শ্বাস, ভীষণ, দেশ | বিজ্ঞান, বিশ্বাস, বিভীষণ, বিদেশ |
প্র | গাঢ়, দেশ, শ্বাস | প্রগাঢ়, প্রদেশ, প্রশ্বাস |
নি | বাস | নিবাস |
সু | স্বপ্ন, দিন, নীল, বাস | সুস্বপ্ন, সুদিন, সুনীল, সুবাস |
আ | বাস, দেশ | আবাস, আদেশ |
১০. নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক শব্দ খুঁজে বের করো :
১০.১ পাঁচ সাত মাইলের ভেতর বঙ্গোপসাগর।
উত্তর : পাঁচ সাত ।
১০.২ জনা ত্রিশেক ছেলেমেয়ে বসে ।
উত্তর : জনা ত্রিশেক ।
১০.৩ সেদিকে তাকিয়ে একটি ছেলে আনমনা হয়ে পড়েছিল ।
উত্তর : একটি ।
১০.৪ এক একদিন রাতে স্বপ্নের ভেতর সেও অমন ভেসে পড়ে ।
উত্তর : এক একদিন ।
১১. নীচের বাক্যগুলি থেকে অনুসর্গ খুঁজে বার করো । প্রতিটি বাক্যের ভিতর যেসব শব্দ আছে তাদের সঙ্গে কী কী বিভক্তি যুক্ত হয়েছে দেখাও ।
১১.১ এখানে বাতাসের ভেতর সবসময় ভিজে জলের ঝাপটা থাকে ।
উত্তর :
ভেতর – অনুসর্গ
থাকে – অনুসর্গ
এখানে – এ বিভক্তি
বাতাসের – এর বিভক্তি
সবসময় – শূন্য বিভক্তি
ভিজে – শূন্য বিভক্তি
জলের – এর বিভক্তি
ঝাপটা – শূন্য বিভক্তি
১১.২ মাটির মেঝে ।
উত্তর :
কোনো অনুসর্গ নেই
মাটির – র বিভক্তি
মেঝে – শূন্য বিভক্তি
১১.৩ সেই জানলা দিয়ে মেঘ দেখা যায় আকাশের ।
উত্তর :
দিয়ে – অনুসর্গ
সেই – শূন্য বিভক্তি
জানলা – শূন্য বিভক্তি
মেঘ – শূন্য বিভক্তি
দেখা – শূন্য বিভক্তি
যায় – শূন্য বিভক্তি
আকাশের – এর বিভক্তি
১১.৪ স্বপ্নের ভেতর সে খাট থেকে পড়েও যায় ।
উত্তর :
ভেতর – অনুসর্গ
থেকে – অনুসর্গ
পড়েও – অনুসর্গ
স্বপ্নের – এর বিভক্তি
সে – শূন্য বিভক্তি
খাট – শূন্য বিভক্তি
যায় – শূন্য বিভক্তি
১১.৫ সে তার স্বপ্নের কথা আর কাউকে কখনও বলবে না ।
উত্তর :
কখনও – অনুসর্গ
সে – শূন্য বিভক্তি
তার – শূন্য বিভক্তি
স্বপ্নের – এর বিভক্তি
কথা – শূন্য বিভক্তি
আর – শূন্য বিভক্তি
কাউকে – কে বিভক্তি
বলবে – শূন্য বিভক্তি
না – শূন্য বিভক্তি
১২. নীচের বাক্যগুলি থেকে উদ্দেশ্য ও বিধেয় অংশ খুঁজে নিয়ে লেখো :
১২.১ আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভে বিভীষণ দাশ এমু পাখির কথা বলেছিলেন ।
১২.২ স্কুলের সামনে ধানক্ষেতে রোয়া ধান সবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ।
১২.৩ গাঢ় ছাইরঙের বিরাট এক পাখি ।
১২.৪ তন্ময় হয়ে শুনছিল শংকর ।
১২.৫ এই খোলামেলা পৃথিবীই সবচেয়ে বড়ো বই ।
উত্তর :
উদ্দেশ্য | বিধেয় |
---|---|
১২.১ বিভীষণ দাশ | আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভে এমু পাখির কথা বলেছিলেন |
১২.২ স্কুলের সামনে ধানক্ষেতে রোয়া ধান | সবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে |
১২.৩ বিরাট এক পাখি | গাঢ় ছাইরঙের |
১২.৪ শংকর | তন্ময় হয়ে শুনছিল |
১২.৫ এই খোলামেলা পৃথিবীই | সবচেয়ে বড়ো বই |
১৩. ‘কথা’, ‘চোখ’ – এই শব্দগুলির প্রত্যেকটিকে দুটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে বাক্য লেখো ।
উত্তর :
কথা
অর্থ ১: শব্দের মাধ্যমে মত প্রকাশ বা ভাষা
অর্থ ২: প্রতিশ্রুতি বা কথা দেওয়া
চোখ
অর্থ ১: দৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা অঙ্গ
অর্থ ২: নজর বা মনোযোগ
১৪. নীচের বাক্যগুলির মধ্যে কোনটি সরল, কোনটি জটিল ও কোনটি যৌগিক বাক্য তা খুঁজে নিয়ে লেখো :
১৪.১ জানলায় কোনো শিক নেই ।
উত্তর : সরল বাক্য ।
১৪.২ জেগে থাকতে দেখা আর স্বপ্নে দেখা জিনিস আজকাল শংকরের গুলিয়ে যাচ্ছে ।
উত্তর : যৌগিক বাক্য ।
১৪.৩ পাখি দেখার জন্য যখন মাঠে বা বাগানে ঘুরবে-তখন খুব সাবধানে পা টিপে টিপে চলবে ।
উত্তর : জটিল বাক্য ।
১৪.৪ বিভীষণ মাস্সাই যে তাকে এমন একটা কথা বলবেন তা ভাবতে পারেনি শংকর ।
উত্তর : জটিল বাক্য।
১৫. নীচের শব্দগুলি দিয়ে বাক্য তৈরি করে একটি অনুচ্ছেদের রূপ দাও :
গুঁড়ো, প্রকৃতি, জানলা, ডানা, ছায়া, শব্দ, স্বপ্ন, খোলামেলা ।
উত্তর : জানলার পাশ থেকে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যায় । সবুজ গাছের ছায়া, খোলামেলা আকাশ, আর পাখিদের ডানা মেলে উড়ে যাওয়া মনকে প্রশান্ত করে । বাতাসে ভেসে আসে পাখির মিষ্টি শব্দ, তা যেন প্রকৃতির এক অদ্ভুত সঙ্গীত । কখনও গাছের পাতায় জমে থাকা শিশিরের গুঁড়ো রোদে ঝলমল করে উঠে, যা স্বপ্নের জগতে নিয়ে যায় । প্রকৃতির এই মুক্ত পরিবেশে সময় কাটানো মানে নিজের সঙ্গে এক গভীর বন্ধন তৈরি করা ।
১৬. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায উত্তর লেখো :
১৬.১ ‘পাগলা বাতাসে তার ঢেউয়ের গুঁড়ো সবসময়ে উড়ে আসছে’ – এখানে বাতাসকে ‘পাগলা’ বলা হলো কেন ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বাতাসকে ‘পাগলা’ বলা হয়েছে কারণ এটি সমুদ্রের ঢেউয়ের গুঁড়ো নিয়ে আশপাশের এলাকায় সবসময় উড়ে বেড়ায় । এই বাতাস অস্থির, দিকহীন, এবং একধরনের চঞ্চল আচরণ করে, যা ‘পাগল’ বা অস্থির প্রকৃতির মতো মনে হয় । বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি হওয়ার কারণে এই বাতাসের ধরণ এমনই ।
১৬.২ ‘বিভীষণ দাশ এমু পাখির কথা বলেছিলেন ।’ – গল্পের ‘বিভীষণ দাশ’-এর পরিচয় দাও । এমু পাখি ছাড়া গল্পে আর কোন পাখির প্রসঙ্গ এসেছে ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বিভীষণ দাশ আকন্দবাড়ি স্কুলের একজন প্রকৃতিবিজ্ঞানের শিক্ষক । তিনি ক্লাস ফাইভের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃতি এবং প্রাণীদের বিষয়ে পড়ান । গল্পে তিনি এমু পাখির বৈশিষ্ট্য ও তার বাসস্থান নিয়ে আলোচনা করছিলেন ।
এমু পাখি ছাড়া গল্পে শঙ্খচিল, বাজ, কাক, মাছরাঙা, হাঁড়িচাচা, ডৌখোল, পানকৌড়ি, তিতির পাখির প্রসঙ্গ এসেছে ।
১৬.৩ ‘শংকর বুঝল, কোথাও একটা বড়ো ভুল হয়ে যাচ্ছে ।’ – কে এই শংকর ? তার স্বভাবের প্রকৃতি কেমন ? তার যে কোথাও একটা বড়ো ভুল হয়ে যাচ্ছে – এটা সে কীভাবে বুঝতে পারল ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকর গল্পের প্রধান চরিত্র । সে অভিমন্যু সেনাপতির ছেলে শংকর সেনাপতি । সে আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভের একজন ছাত্র ।
শংকর খুব কল্পনাপ্রবণ,আনমনা এবং প্রকৃতি ও পাখি দেখতে ভালোবাসে । সে স্বপ্নে অনেক রকম পাখি দেখে । তার স্বভাব অনেকটা স্বপ্নময় এবং চিন্তাধারা বাস্তব ও কল্পনার মাঝামাঝি ।
শংকর বুঝল, ‘কোথাও একটা বড়ো ভুল হয়ে যাচ্ছে,’ কারণ বিভীষণ মাস্টারমশাই যখন তাকে এমু পাখি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন সে স্বপ্নে দেখা এক বিরাট পাখির বর্ণনা দিতে থাকে । কিন্তু মাস্টারমশাই তাকে জানান যে এমু পাখি উড়তে পারে না, বরং এটি দৌড়াতে পারদর্শী । শংকর তখন উপলব্ধি করে যে, সে বাস্তব পাখি নয়, বরং তার স্বপ্নের মধ্যে দেখা কল্পনার পাখির কথা বলেছে । এই কারণে সে নিজেকে বিভ্রান্ত মনে করে এবং বুঝতে পারে যে সে ভুল করেছে ।
১৬.৪ এমু পাখির যে বর্ণনা শংকর দিয়েছিল তার সঙ্গে পাখিটির মিল বা অমিল কী লেখো ।
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকর এমু পাখির যে বর্ণনা দিয়েছিল, তার সঙ্গে পাখিটির মিল এবং অমিল হলো:
মিল:
- শংকর বলেছিল এমু বড়ো আকারের পাখি । এটি ঠিক, কারণ এমু আসলে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি ।
- পাখিটি দেখতে গাঢ় রঙের । শংকরও বলেছিল এটি গাঢ় ছাই রঙের ।
অমিল:
- শংকর বলেছিল এমু উড়ে যায় এবং ডানায় বাতাস কাটার শব্দ হয় । কিন্তু মাস্টারমশাই বলেছিলেন, এমু উড়তে পারে না, এটি কেবল দৌড়াতে পারে । এমু দৌড়বাজ পাখি ।
- শংকর বলেছিল এমু সবেদা গাছে বসে ছিল, কিন্তু বাস্তবে এমু গাছে ওঠে না এবং আন্ডিজ পর্বতে থাকে ।
শংকর স্বপ্নের পাখির সঙ্গে বাস্তবের এমু পাখিকে গুলিয়ে ফেলেছিল ।
১৬.৫ ‘এটা কি পঞ্চানন অপেরা পেয়েছ ?’ – ‘অপেরা’ বলতে কী বোঝ ? এখানে অপেরার প্রসঙ্গ এল কেন ?
উত্তর : অপেরা হলো মঞ্চে অভিনয়সহ গাওয়া একটি নাটক, যেখানে গল্পের মধ্যে গান, আবেগ, এবং অনেক নাটকীয় ঘটনা থাকে ।
লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে অপেরার প্রসঙ্গ এল, কারণ শংকর এমু পাখি নিয়ে যা বলছিল, তা মাস্টারমশাইয়ের কাছে অনেকটা কল্পনাপ্রসূত এবং অতিরঞ্জিত মনে হয়েছিল । শংকর বলেছিল এমু উড়ে যায়, ডানায় বাতাস কাটার শব্দ হয়, আর অন্য পাখিরা ভয়ে সরে যায় । এসব কথা মাস্টারমশাইয়ের কাছে নাটকের মতো শোনায় । তাই তিনি ঠাট্টা করে “পঞ্চানন অপেরা”র কথা বলেছিলেন ।
১৬.৬ ‘বলো, বলতেই হবে’ – কাকে একথা বলা হলো ? উদ্দিষ্টকে কোন কথা বলতে হবে বলে দাবি জানানো হয়েছে ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে ‘বলো, বলতেই হবে’ কথাটি শংকরকে বলা হয়েছিল ।
মাস্টারমশাই বিভীষণ দাশ জানতে চেয়েছিলেন, শংকর কোথায় এমু পাখি দেখেছে । শংকর বলেছিল, সে ঘোলপুকুরে বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছে এমু পাখি দেখেছে । কিন্তু মাস্টারমশাই বিশ্বাস করতে পারেননি, কারণ এমু পাখি আন্ডিজ পর্বতে থাকে এবং উড়তে পারে না । তাই মাস্টারমশাই জোর দিয়ে শংকরকে সত্যি কথাটা বলতে বলেছিলেন । পরে শংকর স্বীকার করে, সে স্বপ্নে এমু পাখি দেখেছিল ।
১৬.৭ গল্প অনুসরণে আকন্দবাড়ি স্কুলে সে প্রকৃতিবিজ্ঞান ক্লাসে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিজের ভাষায় লেখো ।
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে আকন্দবাড়ি স্কুলে প্রকৃতিবিজ্ঞান ক্লাসে বিভীষণ মাস্টারমশাই এমু পাখি নিয়ে পড়াচ্ছিলেন । ক্লাসের সব ছেলেমেয়ে মন দিয়ে শুনছিল, কিন্তু শংকর জানালার বাইরে আনমনা হয়ে আকাশের তাকিয়ে ছিল । সে শঙ্খচিল উড়তে দেখে ভাবনার জগতে হারিয়ে গিয়েছিল । হঠাৎ মাস্টারমশাই তাকে ডাকলে সে চমকে ওঠে ।
শংকর বলেছিল, সে এমু পাখি দেখেছে । মাস্টারমশাই জিজ্ঞেস করেন, কোথায় দেখেছে । শংকর বলে, ঘোলপুকুরের বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছে এমু পাখি বসেছিল । মাস্টারমশাই অবাক হয়ে জানতে চান, কেমন দেখতে । শংকর বলে, বড়, ছাই রঙের, আর উড়তে গিয়ে ডানায় বাতাস কাটার শব্দ হয় ।
তখন মাস্টারমশাই তাকে সংশোধন করে বলেন, এমু পাখি উড়তে পারে না, এটি আন্ডিজ পর্বতে থাকে এবং খুব দ্রুত দৌড়ায় । শংকর বুঝতে পারে, সে ভুল করেছে । শেষে স্বীকার করে, এমু পাখি সে স্বপ্নে দেখেছিল । ক্লাসে সবাই হাসতে থাকে, আর শংকর অস্বস্তি বোধ করে । তবুও মাস্টারমশাই তাকে প্রকৃতির দিকে মনোযোগ দিতে বলেন । তিনি এই পৃথিবীর পাখি, গাছপালা, মেঘ, আলো চোখ খোলা রেখে দেখার জন্য উৎসাহ দেন, যা শংকরের মনে আনন্দ এনে দেয় ।
১৬.৮ ‘স্বপ্নে সে অনেক কিছু জানতে পেরেছে ।’ – কার স্বপ্ন দেখার কথা বলা হয়েছে ? স্বপ্ন দেখে সে কী জেনেছে ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে শংকরের স্বপ্ন দেখার কথা বলা হয়েছে ।
শংকর স্বপ্নে নিজেকে পাখির মতো উড়তে দেখে । সে দেখেছে, স্বপ্নের বাতাসের রং নীলচে, আর বাড়ি-ঘরের রং খয়েরি । স্বপ্নে কোনো ধাক্কা বা গুঁতো খেলে ব্যথা লাগে না । তাই ঘোলপুকুরে বড়োদিঘিতে ডুব দেওয়াব সময় দিঘিতে পোঁতা বাঁশে গা ঘসে গেলেও তার গায়ে ব্যথা লাগে না । শংকর ঘোলপুকুরে বড়োদিঘির জলে নিজেকে পাখির মতো ভাসতে দেখে । স্বপ্নে সে অনেক রকমের পাখি, যেমন এমু পাখি, কল্পনা করে । এইসব স্বপ্ন তার মনে আনন্দ আর উড়ে বেড়ানোর অনুভূতি এনে দেয় ।
১৬.৯ ‘পাখি দেখার জন্য যখন মাঠে বা বাগানে ঘুরবে’ – তখন কীভাবে চলতে হবে ?
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বিভীষণ মাস্টারমশাই বলেছিলেন, পাখি দেখার জন্য যখন মাঠে বা বাগানে ঘুরবে, তখন খুব সাবধানে পা টিপে টিপে চলতে হবে, যাতে পায়ের শব্দ না হয় । জামাকাপড়ের রং শুকনো পাতার রং বা জলপাই রঙের হলে ভালো, কারণ এই রং গাছের পাতার সঙ্গে মিশে যায় । বেগুনি রঙের জামা পরলেও ভালো, কারণ পাখিরা বেগুনি রং দেখতে পায় না । এভাবেই পাখিদের কাছে যাওয়া যায় ।
১৬.১০ ‘তাদের কথা বলতে পারো ?’ – এই প্রশ্নের সূত্র ধরে বক্তা-শ্রোতার কথোপকথনের অংশটুকু নিজের ভাষায় লেখো ।
উত্তর : লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেনাপতি শংকর’ গল্পে বিভীষণ মাস্টারমশাই শংকরকে বলেছিলেন, “তুমি তো গাছে গাছে ঘোরো । তুমি তো অনেকরকম পাখি দ্যাখো । তাদের কথা বলতে পারো ?”
শংকর তখন কিছুটা লজ্জা পেয়ে উত্তর দিয়েছিল, “মাছরাঙা ।“
মাস্টারমশাই আবার জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আর ?“
তখন শংকর আরও বলেছিল, “হাঁড়িচাচা, ডৌখোল, পানকৌড়ি, তিতির ।“
এ কথা শুনে বিভীষণ মাস্টারমশাই বললেন, “বাহ ! যত পারবে চোখ খোলা রেখে এই পৃথিবীর পাখি, গাছপালা, মেঘ, আলো – সব দেখে নেবে । এই খোলামেলা পৃথিবীই সবচেয়ে বড়ো বই । তাকে চোখ ভরে দেখাই সবচেয়ে বড়ো পড়াশুনো ।“
এই কথায় শংকরের মন ভরে গিয়েছিল, কারণ মাস্টারমশাই তার পাখি দেখা আর জানার ইচ্ছেটাকে প্রশংসা করেছিলেন ।
Follow us:
If you like this article, you can Follow us on Facebook.
Also, you can Subscribe to our YouTube Channel.